ওয়েলচের ক্রাম্পের পর পথ হারানো জিম্বাবুয়ে তবু আশায়

ছবি: রাজীব রায়হান।

চা-বিরতির ঠিক আগে হাতে ক্রাম্প করায় খেলা থামিয়েছিলেন নিক ওয়েলচ। কোনরকমে পরে পার করেন সেশন। ২০ মিনিটের বিরতির পর আবার শন উইলিয়ামসকে নিয়ে খেলতে নামেন তিনি। তার দলও তখন দাপটে অবস্থানে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে দুই বল খেলার পরই বেরিয়ে যান। জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং কোচ ডিওন ইব্রাহিম মনে করছেন এই যে ছন্দপতন হয়েছে তাদের সেটাই ডেকে এনেছে আচমকা ব্যাটিং ধস।

২ উইকেটে ১৬১ থেকে ৯ উইকেটে ২১৭- অর্থাৎ ৫৬ রানে পড়েছে ৭ উইকেট। এরমধ্যে তাইজুল ইসলাম একাই নেন ৪ উইকেট। প্রথম সেশনে পাওয়া এক উইকেটের সঙ্গে পুরো করেন ১৬তম ফাইফার।

তৃতীয় উইকেটে শন উইলিয়ামসের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েন ওয়েলচ। তাদের ৯০ রানের জুটির ছেদ পড়ে যায়, জিম্বাবুয়ের ইনিংসেরও যেন তখন অলিখিত ছেদ। সংবাদ সম্মেলনে দিনের খেলা শেষে কথা বলতে এসে ওয়েলচের ক্রাম্প হয়ে বেরিয়ে যাওয়াকে দিনের টার্নিং পয়েন্ট বলছেন ব্যাটিং কোচ ডিওন ইব্রাহিম, 'নিক তার দুই হাতের কনুইয়ের নিচের অংশে এবং পায়ের পেছনের মাংসে তীব্র ব্যথায় ভুগছিল। চা বিরতির ঠিক আগে এটি আরও খারাপের দিকে যায় — আপনারা তাকে মাঠেই চিকিৎসা নিতে দেখেছেন। চা বিরতিতে সে ড্রেসিং রুমে আসে এবং আমরা তাকে আরও চিকিৎসার চেষ্টা করি। দুর্ভাগ্যবশত, চা বিরতির পর তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। তাই সে দ্রুত সুস্থ হয়ে পরে ফিরে আসার আশা নিয়ে মাঠ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। সেই সময়, দুর্ভাগ্যবশত, তার চলে যাওয়ার পর আমরা দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারাই। আমার মনে হয়েছে তার বেরিয় যাওয়ার পর আমরা ছন্দ হারিয়েছি, বিশেষ করে শন উইলিয়ামসের সঙ্গে জুটির ভাঙা আমাদের ছন্দ নষ্ট করেছে।'

ইব্রাহিম কথা বলে চলে যাওয়ার সময় মাঠ প্রস্ততকারকদের একজন বলছিলেন, 'অন্য কোন দল হলে এই উইকেটে মেরে খেলত, জিম্বাবুয়ে অনেক স্লো খেলেই বিপদ ডেকে এনেছে।' 

সময় বাড়লে চট্টগ্রামের উইকেটে স্পিনারদের যে অনেক মশলাধার, সেটার অনুমান আগেই ছিলো। সেই অনুযায়ী জিম্বাবুয়ে যথেষ্ট ইতিবাচক থাকতে পারেনি। প্রথম সেশনে ২ উইকেট হারিয়ে তারা রান তুলে ৮৯, পরের সেশনে সমান ওভার খেলে কোন উইকেট না হারিয়ে যোগ করে ৭২। ৩.১৭ থেকে রানরেট নেমে যায় ২.৫৭, শেষ সেশনে তারা রান করেছে ওভারপ্রতি দুইয়ের নিচে।

অবশ্য এখানেই কৃতিত্ব বাংলাদেশের স্পিনারদের। বিশেষ করে নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলামের। তৃতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টায় প্রবল চাপ তৈরি করেন তারা। একের পর এক ডট বল খেলিয়ে শন উইলিয়ামস, ক্রেইগ আরভিনদের অস্থির করে তুলেন। অভিজ্ঞ ব্যাটাররা আউট হওয়ার পর লোয়ার অর্ডারে হানা দেন তাইজুল। উইকেটে শার্প টার্নের ছোবল আদায় করতে থাকেন দারুণভাবে। ভালো অবস্থা থেকেও কুঁকড়ে গিয়ে তাই ধস নামে সফরকারী ইনিংসে। টস হেরে বাজে শুরুর পরও তাই ম্যাচের লাগাম নিজেদের কাছে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ।

সংবাদ সম্মেলন সেরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাইজুল ইসলাম বলছিলেন, , 'উইকেট অতো খারাপ না, প্রথম ইনিংস চারশোর পিচ মনে হয়েছে'। তবে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং কোচ ডিওন ইব্রহিম মনে করছেন আর ৪০-৫০ রান পেছনে আছেন তারা। উইকেটে প্রথম সেশন থেকেই শার্প টার্ন দেখতে পেয়েছেন তিনি। বাড়তি স্পিনার নিয়ে খেলায় তাদেরও আশা বাংলাদেশকে একই পরিস্থিতি ফেলার, 'আমরা একটু হতাশ। আমরা আরও ৪০-৫০ রান করতে চাইতাম। যাইহোক প্রথম সেশন থেকেই পিচে বল টার্ন করেছে, সেই বিবেচনায় আমরা আশাবাদী। এই কারণে আমরা একজন বাড়তি স্পিনার খেলাচ্ছি। দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ার আগে খেলা ভারসাম্য অবস্থায় আছে। আমরা আশাবাদী আমাদের বোলিং আক্রমণ বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পারবে। যেটা বলছিলাম পিচে এরমধ্যে দৃশ্যমান টার্ন দেখা যাচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
enforced disappearance in Bangladesh

Enforced disappearance: Anti-terror law abused most to frame victims

The fallen Sheikh Hasina government abused the Anti-Terrorism Act, 2009 the most to prosecute victims of enforced disappearance, found the commission investigating enforced disappearances.

7h ago