চীনের ভিসানীতিতে দিল্লি-বেইজিং বন্ধুত্বের ইঙ্গিত

একদিকে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তীব্র কূটনৈতিক লড়াই চলছে চীনের, ঠিক তখনই ভারতীয়দের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিলো চীন।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ এপ্রিলের মধ্যে মোট ৮৫ হাজার ভারতীয়কে ভিসা দিয়েছে চীন, এক কথায় যা অভূতপূর্ব।
শুধু ভিসা দেওয়াই নয়, ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং সামাজিক মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, 'আমরা চাই আরো বেশি ভারতীয় বন্ধু চীনে যান। চীনের মুক্ত, নিরাপদ, প্রাণবন্ত সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হোন।'
ভারতীয়দের জন্য বিশেষ সুবিধা

আরো বেশি ভারতীয় যাতে চীনে যেতে পারেন, তার জন্য বেশ কিছু ছাড় দিয়েছে চীনের প্রশাসন। ভিসার জন্য এখন থেকে ভারতীয়দের আর অনলাইন অ্যাপোয়েন্টমেন্ট চাইতে হবে না। চীনের দূতাবাস বা কনসুলেটে গিয়ে সরাসরি ভিসার দরখাস্ত জমা দেওয়া যাবে। অল্প দিনের জন্য চীনে গেলে ভারতীয়দের বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দিতে হবে না। এর ফলে অনেকটাই সময় বাঁচবে। সবচেয়ে বড় কথা, ভিসার মূল্য আগের চেয়ে অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চীনের দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, ভিসা প্রসেস করার সময় আগের চেয়ে অনেক কমিয়ে ফেলা হয়েছে। বিজনেস এবং পর্যটন দুই ক্ষেত্রেই অনেক কম সময়ে ভিসা দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও ভারতীয় পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য চীনের দূতাবাস এবং কনসুলেটগুলি বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। চীনের বিভিন্ন শহর ও প্রধান উৎসবগুলোকে ঘিরে বিশেষ পর্যটন প্যাকেজ তৈরি করা হচ্ছে।
ভারত-চীন সম্পর্ক

ভারত ও চীন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের একাধিক জোটের অংশ। তবে বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। লাদাখে গালওয়ান লড়াইয়ের পর দুই দেশের সম্পর্কের বিশেষ অবনতি হয়ও। করানাভাইরাস মহামারির পর দুই দেশ কিছুটা কাছাকাছি এলেও সম্পর্ক এখনো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। এই পরিস্থিতিতে চীনের এই অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্পের সঙ্গে লড়াই
শুল্ক নিয়ে কার্যত এক অর্থনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করেছে। পাল্টা শুল্কনীতি নিয়েছে চীনও। এই পরিস্থিতিতে ভারতে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং বলেছেন, 'চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক পরস্পরের পরিপূরক। যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্কনীতি নিয়েছে, তার মোকাবিলায় দুই দেশ পরস্পরকে সাহায্য করতে পারে।'
ইউ জিং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে 'শুল্ক-যুদ্ধ' শুরু করেছে তাতে কারও হার বা জিত হবে না।
সীমান্তে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ভারত-চীন উত্তেজনা পুরোপুরি স্তিমিত হয়ে যায়নি। লাদাখ ও অরুণাচলে এখনো নিয়মিত স্ট্যান্ডঅফ হচ্ছে। তবে চীনের এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা হলেও নরম করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পিটিআই
Comments