২ কোটি টাকার হালদা রিসোর্স সেন্টার এখন শ্রমিকদের অস্থায়ী বাসস্থান

হালদা রিসোর্স সেন্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
হালদা রিসোর্স সেন্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও জনবলের অভাবে উদ্বোধনের পর থেকে দেশের প্রথম নদীভিত্তিক হালদা রিসোর্স সেন্টারটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। মাঝে কেটে গেছে আড়াই বছর।

প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কেন্দ্রটি এখন বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নে অবস্থিত এই কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২২ সালের অক্টোবরে যাত্রা শুরু করে।

প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত সেন্টারটিতে দুইটি পৃথক ভবন রয়েছে। এটিতে একটি ল্যাবরেটরি, একটি কনফারেন্স রুম এবং তিনটি শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর এবং একটি সম্মিলিত ড্রয়িং-ডাইনিং রুম রয়েছে।

গত ১৭ মার্চ কেন্দ্রটি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সেন্টারের ল্যাবরেটরিতে ১৭ জন শ্রমিক বসবাস করছেন। এ সময় একজন শ্রমিককে ল্যাবের সামনে একটি গ্যাসের চুলায় রান্না করতে দেখা যায়।

হালদা রিসোর্স সেন্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
হালদা রিসোর্স সেন্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বসবাসকারীরা পাউবোর একটি রেগুলেটর সংস্কার কাজে নিযুক্ত বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তারা দুই মাস ধরে সেখানে বসবাস করছেন। যে ঠিকাদারের অধীনে তারা কাজ করছেন, তিনিই তাদেরকে সেখানে থাকতে বলেছেন।

এ ছাড়া পাউবোর দুই অস্থায়ী কর্মীও ওই সেন্টারে বসবাস করছেন।

অনুপম চাকমা নামে এক কর্মী বলেন, তিনি কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই সেখানে যোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত আড়াই বছরে আমি তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই সেন্টার পরিদর্শন করতে দেখেছি এবং এখানে দুইটি আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এভাবে কেন্দ্রটির পড়ে থাকায় স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হান্নান বলেন, সরকারি টাকা অপচয়ের বড় উদাহরণ এই কেন্দ্র।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাঙামাটি ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহিন বাদশা বর্তমানে কেন্দ্রের কার্যক্রম তদারকি করছেন। তিনি ঠিকাদারকে এটি একটি অস্থায়ী শ্রমিক শেড হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন।

গবেষণা কেন্দ্রকে কেন শ্রমিক শেডে রূপান্তর করা হয়েছে জানতে চাইলে শাহিন বাদশা বলেন, 'কেন্দ্রটি অলস পড়ে থাকায় আমি তাদের সেখানে থাকার অনুমতি দিয়েছি। তবে, তারা খুব শিগগীর এই স্থানটি খালি করে দেবেন।'

কেন্দ্রটি মূলত হালদা নদীর ওপর গবেষণা পরিচালনার জন্য নির্মিত হয়েছিল।

হালদা রিসোর্স সেন্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
হালদা রিসোর্স সেন্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী শ্রমিক শেডে পরিণত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

উল্লেখ্য, হালদা নদীর মৎস্য সম্পদ তদারকির দায়িত্বে আছে মৎস্য বিভাগ। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনও মৎস্য বিভাগকে এই কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত করেনি।

চট্টগ্রামের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ ডেইলি স্টারকে বলেন, পাউবো এ বিষয়ে তাদের অবহিত করেনি।

'যেহেতু সরকারিভাবে হালদার সম্পদ আমরা তদারকি করি, এ ক্ষেত্রে পাউবোর সহায়তার প্রয়োজন হলে আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করব', যোগ করেন তিনি।

সমন্বয়হীনতার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পাউবোর রাঙামাটি ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কে এম জুলফিকার তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি সমন্বয়হীনতার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরাকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেব।

 

Comments

The Daily Star  | English

Yunus returns home completing 4-day Japan tour

A flight of Singapore Airlines, carrying the CA landed at Hazrat Shahjalal International Airport at 12:15am on Sunday

2h ago