প্রতিক্রিয়া

রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অন্যদের উৎসাহিত করে: আল মাহমুদের পরিবার

আল মাহমুদের মেয়ে আতিয়া মীরের হাতে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এই পুরস্কার প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

'আল মাহমুদ কখনো পুরস্কারের জন্য লেখেননি, এটা তার পাঠকরা জানেন। তবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অন্য কবি লেখকদের উৎসাহিত করে,' বলে জানিয়েছে কবি আল মাহমুদের পরিবার। 

বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মাহমুদের স্বাধীনতা পদক না পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন কবি লেখকরা। অবশেষে আজ কবি আল মাহমুদকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়েছেন অন্তবর্তীকালীন সরকার। এই প্রাপ্তিতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তার পরিবার।

কবির ছেলে মীর মোহাম্মদ মনির দ্য ডেইলি স্টারকে আরও বলেন, 'অনেক দেরিতে হলেও এই মূল্যায়ন হয়েছে বলে আমরা বেশ আনন্দিত। ঈদের আগেই পরিবারের সবার কাছে ঈদের আনন্দ বলা যায়।'

পুরস্কারের অর্থ কবির স্মৃতির কী কাজে ব্যবহার করবেন, এর জবাবে বলেন- আমরা পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিয়ে বসব। পরামর্শ করে জানাব কী করা যায়।  

মঙ্গলবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কবি আল মাহমুদের সাহিত্যকর্মের কথা তুলে ধরে বলেন, "তার কবিতা বহু কবি, লেখক, পাঠকে অনুপ্রাণিত করেছে।"

আল মাহমুদ গবেষক কবি জাকির আবু জাফর বলেন, আল মাহমুদের সময়কাল আমরা জানি। তার উত্থান ঘটেছে পঞ্চাশকের দশকে। ষাটের দশকে প্রথম বইয়ের জন্যেই পেয়েছেন বাংলা একাডেমি। তারপর সোনালি কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না-- এই বইগুলো বাংলা কবিতায় বাঁক ফেরানো রচনা। এমন বইয়ের পাশে অন্য কারো বই রাখা কঠিন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন কবি। মুক্তিযুদ্ধে তার মতো ভূমিকা, অন্য কোন লেখককে এমন করে দেখা যায় না। সার্বিক বিবেচনায় আরও ৪০ বছর আগেই এই পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তাকে দেয়া হয়নি। কারন দেশের ঘৃণ্য রাজনীতির লোকেরা সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করেছে। যা এই দেশের সাহিত্য সংস্কৃতির জন্য ভয়ংকর। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান, জুলাই জাগরণে আল মাহমদের মূল্যায়ন হয়েছে। আমি এতে অনেক খুশি।

আল মাহমুদ শেষ জীবনে চোখে দেখতেন না। তার সে সময়ের অনুলেখক ও কালের কলস সম্পাদক কবি আবিদ আজম বলেন- কবির একটি লাইন 'দেখো দেখো জালিম পালায় খিড়কি দিয়ে'। সত্যি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাসক পালিয়ে যাওয়ায় অন্তবর্তীকালীন সরকার এই পুরস্কার দিয়েছেন। তাতে আনন্দের পাশাপাশি বেদনার্ত আমি। কারণ কবি আজ আর নেই এই দুনিয়ায়। তবে গণঅভ্যুত্থানে তার কবিতা যেভাবে ব্যবহার হয়েছে- তা আশা জাগানিয়া। আল মাহমুদকে আরও ছড়িয়ে দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি তার নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য।

এ বছর সাত জন বিশিষ্ট ব্যক্তি দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এরমধ্যে ছয় জনকে মরণোত্তর এই পুরস্কার দেওয়া হয়, তাদের পক্ষে পরিবারের সদস্যরা পুরস্কার গ্রহণ করেন।

এবার কেবল বদরুদ্দীন উমর জীবদ্দশায় স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তবে তিনি এক বিবৃতির মাধ্যমে পুরস্কার গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 45 lakh cases pending in courts

Each HC judge is burdened with 6,552 cases, while Appellate Division judges are handling 4,446 cases each, and lower court judges 1,977 cases each.

1d ago