ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে যা বলছেন নারী তারকারা

ফাহমিদা নবী, বিদ্যা সিনহা মিম, অপু বিশ্বাস, তানজিকা আমিন, মৌসুমী হামিদ ও দীপা খন্দকার। ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশু ধর্ষণসহ দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল সারাদেশ। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে সরব শোবিজের নারী তারকারাও। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে নিজেদের ভাবনার কথা জানিয়েছেন তাদের কয়েকজন।

ফাহমিদা নবী

মাগুরার ঘটনাসহ নানা জায়গায় নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। এমন অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। কঠিন শাস্তি হতেই হবে। শাস্তি হচ্ছে না বলেই হয়তো অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সেজন্য প্রথম কাজ হচ্ছে অপরাধীর শাস্তিটা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। মেয়েদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা কেন এতটা অসহায়? কবে এর সমাধান হবে? ২০২৫ সালে এসে উন্নত বিশ্বের কাছে আমরা কী জবাব দেবো? সব নারীর নিরাপত্তা চাই। নারীরা সমঅধিকার পাবে, সম-উত্তরাধিকার পাবে—এটাই চাই।

বিদ্যা সিনহা মিম

ধর্ষণের শাস্তি সর্বোচ্চ হওয়া দরকার। অল্প শাস্তি হলে অপরাধীরা একসময় জামিনে বের হয়ে আসবে এবং আবারও একই কাজ করবে। সেজন্য কঠিন শাস্তি দরকার। তাদের ফাঁসি চাই। দুনিয়ার অনেক দেশে কঠিন শাস্তি হয়। আমিও চাই এমন বর্বরদের কঠিন শাস্তি হোক। ফাঁসি হোক। যখন অপরাধীরা দেখবে ধর্ষণের বিচার হচ্ছে এবং ফাঁসি হচ্ছে, তখন ভয় পাবে। সামান্য জেল কিংবা জরিমানায় তারা ভয় পাবে না। ফাঁসির কথা শুনলে অবশ্যই ভয় পাবে এবং এমন জঘন্য অপরাধ করার সাহস পাবে না। ফাঁসির কথা যখন মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়বে, তখন দ্রুত অপরাধ কমে যাবে। নারীরা প্রথমত একজন মানুষ। তাকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। তারপর একজন মা কিংবা বোন। মায়ের ও বোনের সম্মান রাখা সবার দায়িত্ব।

অপু বিশ্বাস

মাগুরার ঘটনাটি আমাকে মর্মাহত করেছে, কষ্ট দিয়েছে। এটি একটি উদাহরণ-মাত্র। আরও তো আছে। আমরা এমন মন খারাপ ও ভয়াবহ দুঃখের খবর চাই না। সুন্দর ও ইতিবাচক খবর শুনতে চাই। নারীকে নারী কেন, মা হিসেবে দেখা উচিত। একজন নারী প্রথমে একজন মা। একজন বোন। একজন স্ত্রী। যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন, তারাও তো কোনো মায়ের সন্তান। কোনো না কোনো মা তাদের পৃথিবীতে এনেছেন। এই বোধটুকু কি নেই? আট  বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কোন ভাষায় এর প্রতিবাদ করব তা জানা নেই। সব নারীর নিরাপত্তা চাই।

তানজিকা আমিন

আমরা নারী দিবস পালন করছি, এটা বাহুল্যতা-মাত্র। যে দেশে আট বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, এর চেয়ে বেদনার কী হতে পারে? আমরা মেয়েরা শঙ্কিত। জানি না কবে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাব। উপরে যারা আছেন, বড় বড় কথা বলছেন, তারা একটু দেখুন প্লিজ। মানসিকতা ও মানবিকতা তো শূন্যের কোটায়। এখান থেকে উত্তরণের পথটা দ্রুত খুঁজুন এবং সমাধান করুন। নারীকে সম্মান করলে, নারীর মর্যাদা রক্ষা করলে সমাজ ও দেশ আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

মৌসুমী হামিদ

আট বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে—এটা ভাবা যায়? ফেসবুকে ঢুকতে পারি না। ফেসবুকে খুন ও ধর্ষণের খবর দেখলেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা খুব করে নারী স্বাধীনতার কথা বলি। আর নরপশুরা সুযোগ পেলেই নারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এমন মানসিকতার কারণ কী? কোথায় যাচ্ছি আমরা? এত অবক্ষয় আমাদের? আমরা কি সহনশীল ও ভালো হতে পারি না? নারীকে মা ও বোনের চোখে দেখতে পারি না? এটা সামাজিক অবক্ষয়। একজন শিশুকে পর্যন্ত নরপশুরা রেহাই দিচ্ছে না। একজন শিশু বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এটা কীভাবে মেনে নেব?

দীপা খন্দকার

প্রথমে বলব আমি একজন মানুষ। তারপর আসে নারী বা পুরুষ। নারীর ওপর যা শুরু হয়েছে, এটা মেনে নিতে পারছি না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। মানসিকতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে? আরেকটি কথা—একজন মেয়ে কী পোশাক পরবে, এটা নিয়ে কেন অন্য পুরুষ কথা বলবে? এই অধিকার তাকে কে দিয়েছে? একজন মেয়ে জিনস পরবে, টি শার্ট পরবে নাকি ওয়েস্টার্ন পরবে নাকি শাড়ি পরবে, সেটা তার অধিকার। আমরা কি কখনো কোনো পুরুষকে বলি, আপনি লুঙ্গি পরেছেন কেন? তার পোশাক নিয়ে কোনো মেয়ে কখনো কিছু বলেছেন? তাহলে পুরুষরা এটা নিয়ে বলার অধিকার কোথায় পেল? এসব মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।

Comments

The Daily Star  | English

20 non-banks on BB red list

As of December last year, they disbursed Tk 25,808 crore in loans against collateral worth Tk 6,899 crore, according to the BB report

10h ago