সেদিন কী ঘটেছিল জানালেন সাইফ

সাইফ আলী খান, বলিউড, কারিনা কাপুর, সাইফ-কারিনা,
সাইফ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি সাইফ আলি খানের মুম্বাইয়ের বাড়িতে ঢুকে এক ব্যক্তি তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারী সাইফের পুত্র জেহের ঘরে প্রবেশ করে। তখন সাইফ বাধা দিতে চাইলে হামলাকারী অভিনেতাকে ছুরি দিয়ে ছয়বার আঘাত করে। হামলার পর সাইফকে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার কয়েকদিন পর সন্দেহভাজন শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ।

ঘটনার পর জেহের আয়া ও করিনা কাপুর খান পুলিশের কাছে ওই রাতে কী ঘটেছিল তা নিয়ে বয়ান দেন। এবার ছুরিকাঘাতের ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন সপ্তাহ পর হামলা নিয়ে মুখ খুললেন সাইফ।

'ওমকারা' খ্যাত অভিনেতা সাইফ আলি খান বলেন, 'কারিনা ডিনারে গিয়েছিল, সকালে আমার কিছু কাজ ছিল। তাই আমি সেখানেই থেকে যাই। তারপর সে ফিরে এলে আমরা কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম এবং ঘুমাতে গেলাম। কিছুক্ষণ পর বাড়ির পরিচারিকা ছুটে এসে বলল, 'ঘরের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে! জেহের ঘরে একটা লোক ছুরি নিয়ে টাকা চাইছে!' তখন রাত প্রায় ২টা বেজে গেছে, হয়তো সময়টা একটু ভুল হতে পারে, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। আমি কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তারপর সেখানে যাই, আমি দেখলাম লোকটা জেহের বিছানার ওপর দুটি লাঠি ধরে রেখেছে (যা আমি ভেবেছিলাম, এটি আসলে একটি হেক্সা ব্লেড ছিল।'

সাইফ আলি খান দিল্লি টাইমসকে জানান, 'ওই ব্যক্তির হাতে হেক্সা ছিল ও সে মুখোশ পরে ছিল। আমি হাতে ধরতে চাইলাম। কিন্তু এ সময় ওই ব্যক্তি আমার পিঠে আঘাত করেছিল। সে আমার ঘাড়ে আঘাত করছিল, আর আমি হাত দিয়ে তা আটকাচ্ছিলাম। আমার তালু, কব্জি ও হাত কেটে যায়। আমি বারবার আত্মরক্ষার চেষ্টা করছিলাম। তবে কিছুক্ষণ পর আর সামলাতে পারলাম না। কারণ হার কাছে ব্লেড ছিল। আর আমি খালি পায়ে, খালি হাতে কুর্তা পাজামা পরে ছিলাম।'

'আমি চাচ্ছিলাম লোকটাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিতে। আমাদের গৃহকর্মী (গীতা) ওকে আমার কাছ থেকে টেনে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল। আর দুজনেই একরকম সরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম। পরে আমার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আমার ডান পায়ে কিছু অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছিলাম। কারণ আমার মেরুদণ্ডে আঘাত লেগেছিল, কিন্তু আমি তখন বুঝতে পারিনি। শুরুতে আমি ভেবেছিলাম আমার পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

একই সাক্ষাত্কারে সাইফ জানান, তিনি ওই ব্যক্তির সঙ্গে লড়াই করতে কিছু খুঁজতে ওপরে গিয়েছিলেন। সেই সময় কারিনা কাপুর খান জেহকে বাইরে নিয়ে তৈমুরের ঘরে যান। মারামারির সময় জেহ বাইরে ছিল এবং কারিনা চিৎকার করে বলেছিলেন, 'বাচ্চাটিকে বাইরে নিয়ে যাও'।

সাইফ জানান, লোকটির সঙ্গে লড়াই করলেও তার কাছে দুটি হেক্সা ব্লেড থাকায় কিছুক্ষণ পর আর নিজেকে সামলাতে পারেননি।

ঘটনার সময় জেহ ঘুমিয়ে ছিল কি না জানতে চাইলে সইফ বলেন, 'সে জেগে উঠেছিল ও কিছু দেখেছিল। আমি সঠিক জানি না, কারণ ব্যস্ত ছিলাম। তারপর আমরা সবাই ওপরে জড়ো হলাম।'

কীভাবে ওই অনুপ্রবেশকারী পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানান সাইফ আলি খান।

তিনি বলেন, 'গীতা বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে রেখেছিল, তাই আমরা ভেবেছিলাম লোকটি ভিতরে আটকে আছে। কিন্তু সে যেভাবে এসেছিল সেভাবেই পালিয়ে গেছে, যদিও আমরা জানতাম না। যে পথে ঢুকেছিল, সেদিকেই গিয়েছিল। ড্রেনপাইপ বেয়ে বাচ্চাদের বাথরুমে ঢুকেছিল। আমরা সবাই নিচে নামার পর দেখলাম আমি রক্তে মাখামাখি।'

আমরা বললাম, চলো লোকটিকে ধরে নিয়ে আসি। আর কারিনা বললেন, 'এখন তোমাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে। জেহকে এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। আমার মনে হচ্ছে, এখনো আশেপাশে অনুপ্রবেশকারী আছে। হয়তো তারা অনেকে এসেছে।'

সেই রাতে চালক সেখানে না থাকায় তারা অন্য একটি বাহনে হাসপাতালে যান। সাইফের সঙ্গে ছিলেন তৈমুর ও আরেক গৃহপরিচারিকা হরি। তবে তৈমুর ও সাইফ হাসপাতালে গেলেও কারিনা জেহকে নিয়ে তার বোন কারিশমা কাপুরের বাড়িতে যান।

Comments

The Daily Star  | English

Finance adviser sees no impact on tax collection from NBR dissolution

His remarks came a day after the interim government issued an ordinance abolishing the NBR and creating two separate divisions under the finance ministry

3h ago