চট্টগ্রামে দিনে-দুপুরে বাসায় ডাকাতি চেষ্টা, আটক ২

ডাকাতির কবলে পড়া বাড়িটিতে সোয়াতের অভিযান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে একটি বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রীকে জিম্মি করে ডাকাতির চেষ্টাকালে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজমের সোয়াত সদস্যদের হাতে আটক হয়েছেন দুইজন।

আজ মঙ্গলবার পাঁচলাইশ প্রবর্তক সংঘের বিপরীতে ছয়তলা একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।

আজ দুপুর আড়াইটা দিকে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, 'ডাকাতরা বাড়িটিতে প্রবেশ করে বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রীকে জিম্মি করে রেখেছিল। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে।'

বাড়িটিতে চারজনের ডাকাত দল প্রবেশ করেছিল বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশ কমিশনার জানান, ডাকাতদের মারধরে আহত বাড়ির মালিক লোকমান হোসেনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাড়িটি থেকে আকাশ ও বায়েজিদ নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আহত অবস্থায় আকাশকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ডাকাতদের চার সদস্যের মধ্যে সাব্বির ও রিয়াদ নামে অপর দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, 'ডাকাতদের একজন বাড়ির মালিককে জিম্মি করে বাথরুমে আটকে রেখেছিল। আমরা সাউন্ড গ্রেনেড ফাটিয়ে তাকে উদ্ধার করেছি।'

'বাসায় কতজন বাসিন্দা ছিল, কতজন ডাকাত প্রবেশ করেছে—সেগুলো আমরা তদন্ত করছি,' বলেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, বাড়িটির মালিক লোকমান হাকিম ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শিল্পপতি আবুল খায়েরের মেয়ের স্বামী। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে তিনি বসবাস করেন।

পুলিশ ও বাড়ির অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আটককৃত আকাশ ও সাব্বির দুজনই ওই বাসায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতেন। বাসাটিতে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট সাতজন কাজ করেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে আকাশ ও সাব্বির বাসা ছিলেন এবং তাদের সহযোগিতায় বাইরে থেকে আরও দুজন সেখানে প্রবেশ করেন। বাসায় ঢুকেই তারা লোকমান ও তার স্ত্রীকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলেন এবং আলাদা রুমে রাখেন।

তারা জানান, ডাকাতদের হাতে ধারালো বড় ছুরি ছিল। লোকমান ও তার স্ত্রীকে বাঁধার সময় রুমের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয় এবং একপর্যায়ে কাজের মেয়েরা চিৎকার দিলে বাইরে থেকে আসা দুজন পালিয়ে যান। সাব্বির পালানোর চেষ্টা করলেও নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরে ফেলেন। আকাশ বাসার ভেতরে ছুরি নিয়ে জিম্মি করেন লোকমানকে।

খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী ও সোয়াত সদস্যরা ওই বাড়ির সামনে পৌঁছান এবং সোয়াত সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে আহত লোকমানকে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে দরজা আটকে দেন আকাশ। পরে দরজাটি ভেঙে দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে লোকমানকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় একটি সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷

পুলিশ জানায়, ডাকাতির উদ্দেশ্য নিয়েই সবকিছু পরিকল্পনা করা হয়েছিল, এমনটি ধরেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে, অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে সেটাও তদন্ত করে বের করা হবে। পালিয়ে যাওয়া ডাকাত দলের দুজনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের আটকের চেষ্টা চালছে।

Comments

The Daily Star  | English

'Rab destroyed secret detention centres post August 5'

Finds Commission of Inquiry on Enforced Disappearances

1h ago