বরিশালকে হারিয়ে প্রথম কোয়ালিফায়ারে বরিশালকেই পেল চিটাগং

ছবি: চিটাগং কিংস

পারভেজ হোসেন ইমনের ঝড়ো ফিফটির পাশাপাশি আগ্রাসী ইনিংস খেললেন হায়দার আলী ও শামিম হোসেন পাটোয়ারী। এতে দুইশ ছাড়ানো বড় পুঁজি মিলল চিটাগং কিংসের। এরপর ডাভিড মালান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চেষ্টা করলেও লক্ষ্য থেকে দূরে থামতে হলো ফরচুন বরিশালকে।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে চিটাগং জিতেছে ২৪ রানে। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ২০৬ রান করে তারা। জবাবে ৭ উইকেটে ১৮২ রানে থামে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বরিশাল।

এই জয়ে রংপুর রাইডার্সকে টপকে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে গেছে চিটাগং। ১২ ম্যাচে দুই দলের পয়েন্ট সমান ১৬ হলেও নেট রান রেটের ব্যবধানে রংপুরের (+০.৫৯৬) চেয়ে এগিয়ে আছে চিটাগং (+১.৩৯৫)। ফলে প্লে-অফ পর্বের প্রথম কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিয়েছে চিটাগং। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বরিশালই।

আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে ফের মুখোমুখি হবে বরিশাল ও চিটাগং। জয়ী দল সরাসরি চলে যাবে ফাইনালে। পরাজিত দল আরেকটি সুযোগ পাবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে ওঠার।

উদ্বোধনী জুটিতে ৬.৫ ওভারে ৫৮ রান যোগ করে চিটাগং। এতে ভালো সংগ্রহের ভিত মিলে যায় তাদের। ওপেনার খাওয়াজা নাফায়ে ১৯ বলে ২২ করে ফিরে গেলেও চলতে থাকে আরেক ওপেনার ইমনের আগ্রাসন। চারের চেয়ে ছক্কা হাঁকানোর দিকেই মনোযোগ ছিল তার। ৩১ বলে ইমন যখন ফিফটি পূর্ণ করেন, তখন তার নামের পাশে ছয়টি ছক্কা থাকলেও চার ছিল না একটিও।

গ্রাহাম ক্লার্কের সঙ্গে মাত্র ৩৬ বলে ৭০ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন ইমন। ৪১ বলে তিনি খেলেন ৭৫ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে একটি চারের সঙ্গে আসে আটটি ছক্কা। অল্প সময়ের ব্যবধানে ফিরে যান ক্লার্ক। ২১ বলে ২৬ রান করেন তিনি। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন টিকতে পারেননি। ১ রান করতে তার লাগে ৪ বল।

চারে নামা পাকিস্তানি হায়দার আগে থেকেই ছিলেন মারমুখী মেজাজে, ক্রিজে গিয়ে তাকে ছাপিয়ে যান শামিম। দুজনের নৈপুণ্যে দুইশ পেরিয়ে যায় চিটাগংয়ের সংগ্রহ। ১৯ বলে ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তিনি অপরাজিত থাকেন ১২ বলে ৩০ রানে। তার ব্যাট থেকে আসে তিনটি চার ও দুটি ছক্কা। হায়দার তিনটি করে ছক্কা ও চারে ২৩ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন।

বরিশালের পক্ষে তাইজুল ইসলাম ২ উইকেট নিলেও ছিলেন খরুচে। চার ওভারে ৪৬ রান দেন তিনি। দলটির বাকি বোলাররাও প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের তোপে মুখে পড়েন। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন ইবাদত হোসেন। চার ওভারে মাত্র ১৯ রানে ১ উইকেট পান তিনি।

লক্ষ্য তাড়ায় ১৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বরিশাল। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৬ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। তাওহিদ হৃদয় ১১ বলে ৯ করে থামেন। মন্থর শুরুতে পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ৩০ রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারে শিরোপাধারীরা।

এরপর ইংলিশ ব্যাটার মালান দলকে টানেন। প্রথমে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৩১ বলে ৫৩ ও পরে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ২৬ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু শুরুর ধীরগতির কারণে সমীকরণ বরাবরই কঠিন থাকে বরিশালের জন্য। সেটা আর মেলাতে পারেনি তারা।

মালান ৩৪ বলে পাঁচটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ২৪ বলে ৪১ রানে। তার ব্যাট থেকে আসে দুটি করে চার ও ছক্কা। মুশফিক আউট হন ২২ বলে ২৪ রান করে। চিটাগংয়ের পক্ষে লঙ্কান বিনুরা ফার্নান্দো ও আলিস আল ইসলাম দুটি করে উইকেট শিকার করেন। একটি করে উইকেট নেন আরাফাত সানি ও খালেদ আহমেদ।

Comments