সামরিক ঘাঁটি রাখতে চাইলে আসাদকে ফেরত দিন: রাশিয়াকে সিরিয়া
সিরিয়াতে এখনো দুটি রুশ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। মস্কো এগুলো ধরে রাখতে চাইলে বাশার আল-আসাদকে ফেরত দিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে দামেস্ক।
বুধবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার এই দাবির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মস্কো।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বুধবার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে করা প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি।
এর আগে মঙ্গলবার রাশিয়ার উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করে।
শারার নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে গত ডিসেম্বরে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন দেশটির দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক ও রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র বাশার আল-আসাদ। পালিয়ে তিনি রাশিয়াতেই আশ্রয় নেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনের ভাষ্য, আসাদের এই পতন রাশিয়ার জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। কারণ সিরিয়ায় অবস্থিত তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলো আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে মস্কোর প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বুধবার মস্কোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ দূত এবং উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বগদানভের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে 'খোলামেলা' আলোচনা করেছে। দেশটিতে অবস্থিত রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত তারতুস নৌঘাঁটি এবং খামেইমিম বিমানঘাঁটি ধরে রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।
কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর বিনিময়ে বাশার আল-আসাদকে সিরিয়ায় ফেরত পাঠানোর দাবি জানান আল-শারা।
সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, রুশ প্রতিনিধি দলকে বিশ্বাস পুনর্নির্মাণের জন্য 'ক্ষতিপূরণ, পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধারের মতো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের' আহ্বান জানিয়েছেন আল-শারা।
সিরিয়ার প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'সম্পর্ক পুনস্থাপন করতে হলে অতীতের ভুলগুলো স্বীকার করতে হবে, সিরিয়ার জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে হবে এবং তাদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।'
এক সিরীয় সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, বৈঠকে রাশিয়া তাদের 'ভুলগুলো' মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না, যে কারণে দুই পক্ষের মাঝে কোনো চুক্তি হয়নি। কেবল আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে দামেস্ক ও মস্কো।
লাতাকিয়া প্রদেশে অবস্থিত তারতুস নৌঘাঁটি এবং খামেইমিম বিমানঘাঁটি ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও আফ্রিকায় মস্কোর প্রভাব বিস্তারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাইরে রাশিয়ার কেবল এই দুটি সামরিক ঘাঁটিই রয়েছে।
Comments