ডিবি পুলিশের মারধরে দোকানদারের মৃত্যুর অভিযোগ

মিলন বেপারি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় ডিবি পুলিশের মারধরে এক দোকানদারের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মৃত মিলন বেপারি (৫৫) উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের পশ্চিম নাওডোবা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পদ্মাসেতুর রেল ভায়াডাক্টের কাছে একটি মুদি দোকান চালাতেন তিনি।

গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে ওই এলাকায় ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়। 

পরিবারের অভিযোগ, অভিযানের সময় ডিবি সদস্যদের মারধরের কারণে মিলন ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়ে মারা যান।

নিহত মিলনের ছেলে আল-আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন আমার বাবাকে মারধর করছিল। সেসময় আমি দোকানে ঘুমিয়ে ছিলাম। আমি ভয় পেয়ে মাকে ডেকে আনি। তাদের মারধরে বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আমার আর মায়ের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ডিবি পরিচয় দেওয়া সবাই মোটরসাইকেলে করে চলে যান।'

পরে মিলনের পরিবার ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। জাজিরা থানা পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়।

জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএম রোমান বাদশা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালে আনার অনেক আগেই মিলন বেপারির মৃত্যু হয়। মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।'

'মৃতের মাথার পেছনের দিকে লাল ছোপ রক্তের দাগ দেখা গেছে। এই দাগ আঘাতের কারণে হতে পারে, অথবা মরদেহ বেশিক্ষণ শুইয়ে রাখার কারণেও হতে পারে। তিনি ভয়ের কারণে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতে পারেন। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে,' বলেন তিনি। 

জানা যায়, গতরাতে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক নওশেরের নেতৃত্বে ওই অভিযান চালানো হয়। ঘটনার বিষয়ে জানতে নওশেরকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জানতে চাইলে শরীয়তপুর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু বকর মাতুব্বর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিবি সদস্যরা জাজিরার কাজীকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক মামলার আসামি মোজাম্মেল মাঝিকে (৪৫) আটক করে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে তার আর কে জড়িত, জানতে চাইলে মোজাম্মেল তার সহযোগী হিসেবে নিহত মিলনের ভাগ্নে (বড় বোনের ছেলে) জামাল বেপারির নাম বলে। জামালের বাসা মিলনের বাসার পাশেই। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামালকে আটক করা হয়। এ খবর পেয়ে জামালের মামা মিলন তাকে ছাড়িয়ে নিতে দৌড়ে আসে। তখন তিনি হাঁপিয়ে অসুস্থ হয়ে যান।'

তিনি আরও বলেন, 'তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। তার স্বজন ও স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।'

ডিবির মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের কোনো সদস্য মিলনকে মারধর করেননি। এ অভিযোগ মিথ্যা। তারপরও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, তাই আমরা তদন্ত করব। যদি পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

যোগাযোগ করা হলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আব্দুস সালাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পদ্মাসেতুর দক্ষিণ থানা এলাকার বাসিন্দা মিলনকে গতরাতে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমরা মরদেহটি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠাই।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago