কুমিল্লায় মায়ের সামনে ছেলেকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ইমরান হোসেন (২১) নামে এক যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে একদল দুর্বৃত্ত। অভিযোগ উঠেছে, বাধা দিতে এসে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ইমরানের মা।
আজ শনিবার রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, এই ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ইতোমধ্যে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগপত্রে শহীদুর রেজা রতন মিয়াজীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ইমরানের পরিবার।
ইমরানের বাড়ি উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মো. শাহ আলম।
ইমরানে মা আফরোজা বেগম বলেন, 'শহীদুর রেজা রতন মিয়াজী চিহ্নিত সন্ত্রাসী, এলাকায় তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে আমার ছেলে প্রায় সময় প্রতিবাদ করতো। যে কারণে রতন আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে আসছিল।'
তিনি জানান, ইমরান পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় তারাশাইল বাজারের একজন বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে ইমরান ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শহীদুর রেজা রতন মিয়াজী নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর শুরু করে।
ছেলের চিৎকার শুনে আফরোজা বেগম এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এরপর ইমরানকে মসজিদের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মায়ের সামনেই নির্যাতন করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রায় রাত ৯টা পর্যন্ত নির্যাতন চলে। এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে ইমরানকে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তাদের হাতে অস্ত্র থাকায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসার সাহস করেনি। স্বজনরা ইমরানকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়, উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।
আফরোজা বেগম জানান, ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি নিজেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাবেদ হোসেন বলেন, রাত ১২টা ২০ মিনিটে ইমরান হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থা হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেই।
নির্যাতনের একটি ভিডিও শনিবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। হিলাল উদ্দিন বলেন, 'নির্যাতনের ভিডিও আমার নজরে এসেছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।'
Comments