ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে শিশুর মৃত্যু, রোহিঙ্গাদের অভিযোগ পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় নয়াপাড়ায় মোছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে আয়েশা সিদ্দিকা নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ শুক্রবার ভোররাতে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এছাড়া, কমপক্ষে ১০০ ঘর পুড়ে গেছে।
রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
ক্যাম্পের জি-২ ব্লকের কমিউনিটি নেতা ওমর ফারুক বলেন, 'রাতে হঠাৎ আমার ঘরের পাশে আগুন ধরে যায় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ধরার আগে থেকেই অনেক ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল, যা থেকে বোঝা যায় পরিকল্পিতভাবেই এই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু দিন থেকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল ক্যাম্পে আগুন লাগতে পারে।'
মৃত শিশুর বাবা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, 'আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমিও সবার সঙ্গে পালানোর চেষ্টা করি। তখন আমার মেয়েকে খুঁজে পাইনি।'
তিনি আরও বলেন, 'এই অগ্নিকাণ্ড কোনো দুর্ঘটনা না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করি।'
ক্যাম্পের আরেক বাসিন্দা শাহেদ নূর বলেন, 'অপহরণে জড়িত এক অপরাধীকে ক্যাম্প থেকে ধরে আমরা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। তিন দিন আগে তার গ্যাং ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।'
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার ও অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ কাউসার সিকদার জানান, 'এপিবিএন সদস্যরা আগুন নেভাতে রোহিঙ্গাদের সহায়তা করেছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০০ ঘর ও বিভিন্ন অবকাঠামো পুড়ে গেছে এবং এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।'
'অভিযোগ উঠেছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে,' যোগ করেন তিনি।
ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দাতা সংস্থাগুলো ঘর পুনর্নির্মাণ করে দিতে শুরু করেছে। শিগগির তারা নতুন ঘর পাবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রাথমিকভাবে তাদের কম্বল, শুকনো খাবার এবং অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করছে।'
Comments