সয়াবিন তেল

ঝোপ বুঝে কোপ মারছেন ব্যবসায়ীরা

স্টার ফাইল ফটো

দেশের বাজারে আবারও বাড়ছে সয়াবিন তেলের দাম। গত এক সপ্তাহ ধরে দাম বেড়েই চলেছে। মুদি দোকানিরা বলছেন, তারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পর্যাপ্ত তেল পাচ্ছেন না।

এ দিকে, খুচরা বাজারে সরবরাহ ঘাটতির প্রেক্ষাপটে সয়াবিন ও পাম তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কাছে দাম পর্যালোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ৯ ডিসেম্বর ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে।

এক লিটার বোতলের পাম তেলের দাম বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ।

গতকাল বুধবার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৭৩ থেকে ১৭৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬৮ টাকা। প্রতি লিটার পাম তেল বিক্রি হয়েছে ১৬২ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫৯ টাকা।

গত ৬ জানুয়ারি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম সমন্বয়ের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে বলেও সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বিশ্লেষণ করে অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম সমন্বয় করা প্রয়োজন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, আসন্ন রমজানে ভোজ্যতেলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দাম সমন্বয় জরুরি।

সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামীকাল ১০ জানুয়ারি দাম সমন্বয় করার কথা।

গত ৯ ডিসেম্বর সরকার সয়াবিন ও পাম তেলের খুচরা দাম লিটারে আট টাকা বাড়িয়ে দেয়। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেল ১৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

নতুন দাম তাত্ক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে ভোজ্যতেলের দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করা হবে।

ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকটের মধ্যে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কর কমানোর পরও খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা আমদানি কমিয়েছেন।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর থেকে দুই দফায় সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হয়।

ঢাকার অন্যতম বৃহৎ কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ বাবলু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিসেম্বর মাসে সরকার দাম বাড়ানোর পর কাঁচাবাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কিছুটা বেড়ে যায়। এরপর থেকে আবার সরবরাহ কমতে থাকে।'

তিনি জানান, তার দোকানে প্রতিদিন ৪০০ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের চাহিদা আছে। পাইকারদের কাছ থেকে পাচ্ছেন ২৫০ থেকে ৩০০ লিটার।

তিনি আরও জানান, দেশের একটি শীর্ষ ভোজ্যতেলের ব্র্যান্ড তার দোকানের চাহিদার ৭০ শতাংশ পূরণ করলেও অন্য ব্র্যান্ডগুলো থেকে পণ্য পাচ্ছেন না।

পুষ্টি সয়াবিন তেলের প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের পরিচালক (ফিন্যান্স অ্যান্ড অপারেশনস) শফিউল আতাহার তসলিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দাম সমন্বয়ের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সরকার আমাদের আমদানি খরচ বিশ্লেষণ করবে। তখন দাম বাড়তে বা কমতে পারে।'

তার ভাষ্য, 'ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে নাকি কমবে তা এখন বলতে পারছি না। বাংলাদেশ ব্যাংক ও কাস্টমস থেকে তথ্য নিয়ে সরকার দাম বিশ্লেষণ করবে।'

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৯০ শতাংশের বেশি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Dengue cases see sharp rise in early July

Over 1,160 hospitalised in first 3 days, total cases cross 11,000

15h ago