বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বাবদ ২০০ কোটি রুপি পাওনা: ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী

প্রতীকী ছবি | সংগৃহীত

বাংলাদেশের কাছে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ প্রায় ২০০ কোটি রুপি পাওনা বলে দাবি করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।

আজ সোমবার আগরতলায় পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।

জানা গেছে, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ করপোরেশন লিমিটেড ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যকার এক চুক্তি অনুযায়ী ত্রিপুরা সরকার বাংলাদেশে ৬০-৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে।

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেন, 'আমাদের সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ বাবদ বাংলাদেশ প্রায় ২০০ কোটি রুপি পরিশোধ করেনি। বকেয়ার পরিমাণ প্রতিদিন বাড়ছে। আশা করি তারা এ বকেয়া পরিশোধ করবে, যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত না হয়।'

বকেয়া পরিশোধ না করলে ত্রিপুরা সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখনও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।'

তিনি বলেন, 'ত্রিপুরার বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশকিছু যন্ত্রপাতি বাংলাদেশ ভূখণ্ড বা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে আনা হয়েছে। এ কারণে কৃতজ্ঞতাবশত ত্রিপুরা সরকার একটি চুক্তির আওতায় সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে।'

'কিন্তু বাংলাদেশ বকেয়া পরিশোধ না করলে আমরা কতদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যেতে পারব জানি না,' বলেন মানিক সাহা।

২০১৬ সালের মার্চে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে ত্রিপুরা। দক্ষিণ ত্রিপুরার পালাটানায় ৭২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র থেকে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কমিশনের ত্রিপুরা পাওয়ার কোম্পানির (ওটিপিসি) অধীনে পরিচালিত হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে এখানে এখনো অনুপ্রবেশ ঘটেনি। তবে সীমান্ত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, কারণ সীমান্তের অনেক জায়গায় নিরাপত্তা নেই। তবে, আগস্টে বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বড় আকারে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।'

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওই ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। যেখানে আইন লঙ্ঘন হয়েছে সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ত্রিপুরায় বাংলাদেশি পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।'

'বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় আসা পণ্যের মধ্যে আছে সিমেন্ট, পাথর ও ইলিশ মাছ। এগুলোর সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যদি আগরতলা ও ঢাকার মধ্যে রেল যোগাযোগ পুনরায় শুরু করা হয়, তাহলে সেটি দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত লাভজনক হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দরকে কোনো বাধা ছাড়াই ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হলে, উত্তর-পূর্বের সবগুলো রাজ্য যথেষ্ট উপকৃত হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Seven crew members were sedated, killed by fellow: Rab

Akash carried out the killings out of frustration over unpaid wages, a Rab official said after the arrest of the suspect

1h ago