বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: দ্রুত বিচারসহ সহপাঠীদের ৬ দফা দাবি

পলাশী মোড়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পূর্বাচলে গাড়ির ধাক্কায় সহপাঠী মোহতাসিম মাসুদ নিহত হওয়ার ঘটনাটিকে 'হত্যাকাণ্ড' হিসেবে অভিহিত করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে পলাশী মোড়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—১. যেকোনো মূল্যে এই হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা। ২. বিবাদীপক্ষকে অবশ্যই আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেওয়া। ৩. নিহত মাসুদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে বিবাদীপক্ষকে বাধ্য করা। ৪. তদন্ত কার্যক্রমে বাধাদানের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া। ৫. আহতদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাপারে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। ৬. সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর কারও প্রাণ যেন না যায় এবং সড়কে নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়, সেই ব্যাপারে সরকারের যথোপযুক্ত ভূমিকা রাখা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে পূর্বাচল নীলা মার্কেটের সামনে ৩০০ ফিট রাস্তায় সাবেক সেনা কর্মকর্তার এ লেভেলে পড়ুয়া ছেলে সাদমান মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে আমাদের এক ভাই মোহতাসিম মাসুদকে। এতে মারাত্মকভাবে আহত হন একই ব্যাচের অমিত সাহা ও মো. মেহেদি হাসান খাঁন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, অমিতের কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে সংকেত পেয়ে তারা বাইক থামিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিল। আমরা সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি যে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, 'এই আকস্মিক হত্যাকাণ্ডের শোকে আমরা যখন হতবিহ্বল, ঠিক তখনই আমরা জানতে পারি যে, অভিযুক্ত গাড়িচালকের পিতা একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রভাবশালী ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল। তার কারণে আমাদের এক ভাইয়ের যখন প্রাণ দিতে হলো, আমাদের আরও দুই ভাই যখন মারাত্মকভাবে আহত, ঠিক তখনই গাড়িচালকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়রা মামলার মোড় ঘোরানোর, এমনকি মামলা যাতে না নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত।'

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, 'অতীতেও আমরা দেখেছি যে অপরাধী যদি প্রভাবশালী হয়, তাহলে বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, হুমকি-ধামকি দিয়ে মামলা না করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। আবার প্রাথমিকভাবে মামলা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব খাটায় কিংবা নানাভাবে ছাড় পেয়ে যায়। এটা আমরা হতে দিতে পারি না কখনোই। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু ও অতিসত্বর বিচার চাই।'

 

Comments