চসিক নির্বাহী প্রকৌশলী চাকরিচ্যুত

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রকৌশল বিভাগের বিদ্যুৎ উপবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

রোববার চসিক মেয়রের সই করা অফিস আদেশ থেকে এই সিদ্ধান্ত জানা যায়। ওই দিন থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে এবং বিধি অনুযায়ী তিনি ৯০ দিনের বেতন পাবেন বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

ঝুলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৩, ৪ ও ৫ আগস্ট সড়ক বাতি বন্ধ রেখেছিলেন।

অবশ্য বরাবরই এ ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন ঝুলন।

১৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই অভিযোগ উত্থাপন করে এবং ঝুলনকে অপসারণের দাবি জানায়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরদিনই তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

২৬ সেপ্টেম্বর বদলি করা হয় ঝুলনকে। ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি যোগ দেন নতুন কর্মস্থল রংপুর সিটি করপোরেশনে।

১৫ অক্টোবর জমা দেওয়া প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি উল্লেখ করে, সড়ক বাতি নিভানোর ঘটনায় ঝুলনের নির্দেশ দেওয়ার প্রমাণ না পেলেও তার দায়ভার আছে।

চসিক সূত্র জানায়, বাতি নেভানোর নির্দেশ দেওয়ার প্রমাণ না পেলেও সড়ক বাতি বন্ধের সময়ে বিদ্যুৎ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিডিবি। যেহেতু বিদ্যুৎ থাকার পরও সড়ক বাতি বন্ধ ছিল, সেহেতু এটি 'গাফিলতি'। এসব দিক আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি মনে করছে, পুরো ঘটনায় প্রকৌশলী ঝুলন দাশের দায়ভার রয়েছে।

জানতে চাইলে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'সড়ক বাতি নেভানোর ঘটনায় সরাসরি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি ঝুলন দাশের বিরুদ্ধে। তবে বিদ্যুৎ থাকার পরও সড়ক বাতি বন্ধে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর দায়ভার রয়েছে বলে মনে করছে তদন্ত কমিটি।'

চাকরিচ্যুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঝুলন দাশ বলেন, 'সড়ক বাতি নেভানোর ঘটনায় আমার কোনো দায় নেই। আমি তো মধ্যম সাড়ির কর্মকর্তা। আমার উপরে বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আছেন। তার উপরে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছেন।'

তিনি বলেন, 'তদন্ত কমিটিকে লিখিতভাবে আমার বক্তব্য জানিয়েছি। কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, এই ঘটনায় আমার সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তারপরও শুনেছি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অথচ সিটি করপোরেশনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার আদেশ ছাড়া কোনো কাজ হয় না।'

তিনি দাবি করেন, 'পেশাগত ঈর্ষা থেকে এক শ্রেণির কর্মকর্তা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে এটা করেছে। আমি মেয়র মহোদয়ের কাছে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করবো।'

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তরে জানান, অফিসের কাজে তিনি দেশের বাইরে আছেন।

চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেনের মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

Comments