প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী রোডম্যাপ: ছাত্রনেতাদের প্রতিক্রিয়া
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই প্রথম প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নির্বাচনের আনুমানিক সময়সীমা জানানো হলো।
ছাত্রনেতারা বিষয়টিকে ইতিবাচক বলেই উল্লেখ করেছেন। তবে তারা মনে করছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দ্রুত আয়োজন করা উচিত অন্তর্বর্তী সরকারের।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথোপকথনে ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা বলেন, সরকার নির্বাচনের যে সময়সীমার কথা বলেছে, সে সময়ে নির্বাচন হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দৃশ্যমান হওয়া উচিত।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহারিয়ার রেজা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মনে করি বিদ্যমান যে নির্বাচন ব্যবস্থা বাংলাদেশে রয়েছে, সেটি সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। আমরা বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন, নির্বাচনে কমিশনকে দলীয় প্রভাবমুক্তকরণ এবং নির্বাচন কমিশন আইন পাস করার কথা বলেছি। অন্তর্বর্তী সরকার যদি এসব প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, তাহলে আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাব।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এটিও মনে করি যে, দীর্ঘদিন ধরে অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকা দেশের গণতন্ত্রের চর্চার জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। সুতরাং আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারগুলো শেষ করে যেন নির্বাচন আয়োজন করা হয়।'
জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন, 'আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী টাইমফ্রেমকে পজিটিভলি দেখছি। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হওয়া উচিত। যদিও আমরা চেয়েছি, সংস্কারের একটি নির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করে তারপর নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করতে। হয়তো প্রধান উপদেষ্টা সেরকম সংস্কারের একটি রূপরেখা তৈরি করছেন।'
'সেই সংস্কারের রূপরেখা এরকম যে, এই সময়ের মধ্যে আমরা এই সংস্কারগুলো করব, তারপর নির্বাচন আয়োজন করব। এখন নির্বাচনের সময়সীমা যদি আগামী বছরের শেষে হয় অথবা পরের বছরের শুরুতে হয়, হতে পারে। সর্বোপরি নির্বাচনের আগেই সংস্কার করতে হবে। সংস্কারের পরেই নির্বাচন হওয়া উচিত,' বলেন তিনি।
এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। তবে, বর্তমান সংস্কার কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া উচিত। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি চলমানই থাকবে।'
Comments