প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়ের পরও নেতিবাচক চিন্তা করেনি বাংলাদেশ

Bangladesh Cricket Team

অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে বিশাল ব্যবধানে হেরে জ্যামাইকায় এসে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ, গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৬৪ রানে। তখন আরেকটি একপেশে পরাজয়ের শঙ্কাই ছিলো। কিন্তু ওই অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দল পেয়েছে স্মরণীয় জয়। ম্যাচ জিতে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বলছেন, প্রথম ইনিংসে অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরও নেতিবাচক চিন্তা গ্রাস করেনি তাদের।

কিংস্টনে মঙ্গলবার চতুর্থ দিনেই ম্যাচ শেষ করেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে হারিয়ে সিরিজে এনেছে সমতা। প্রতিপক্ষকে ২৮৭ রানের লক্ষ্য দিয়ে স্বাগতিক দলকে আটকে দেয় ১৮৫ রানে।

বিসিবির পাঠানো ভিডিওতে মিরাজ বলছেন প্রথম ইনিংস বিপর্যয়ের পরও বিশ্বাস থেকে সরে যাননি তারা, '(প্রথম ইনিংসে) ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পরও আমরা নেতিবাচক চিন্তা করিনি। খেলোয়াড়েরা খুব ভালো বোলিং করেছে। প্রথম ইনিংসে নাহিদ রানা, তাসকিন ও হাসান মাহমুদ যেমন, দ্বিতীয় ইনিংসের বিশেষজ্ঞ তাইজুল পেয়েছে ৫ উইকেট। সে দুর্দান্ত...আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কীভাবে উন্নতি করব, আমরা সেটা ভাবি। কখনো কখনো আমরা ভুল করব, তবে সেখান থেকে শিখবও।'

'খুবই ভালো লাগছে, প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা অর্জন। যেহেতু আমি প্রথম অধিনায়কত্ব করছি, এটা আমার জন্য বড় একটা পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।'

স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশকে মূলত তৃতীয় দিনে ম্যাচে ফেরান নাহিদ রানা। গতিময় ডানহাতি পেসার ৫ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দেন ১৪৬ রানে, তাতে ১৮ রানের লিড পেয়ে যায়। এরপর ইতিবাচক অ্যাপ্রোচে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে লিড বড় করে নেয় সফরকারীরা। এতে বড় ভূমিকা রাখেন ৯১ রান করা জাকের আলি অনিক। জয়ের কৃতিত্ব অবশ্য মিরাজ সবাইকেই দিলেন, 'জয়ের কৃতিত্ব দিতে চাই সব খেলোয়াড়কে। আমি যেভাবে পরামর্শ দিয়েছি, সবাই মেনে নিয়েছে। কন্ডিশনটা সহজ ছিল না। সব খেলোয়াড়ের জন্যই অনেক কঠিন ছিল। সবাই মানসিকভাবে এমন ছিল যে ম্যাচটা জিততে হবে। সবাই চেয়েছিল মন থেকে ম্যাচটা জেতার জন্য। এর জন্যই আমরা ম্যাচটা জিততে পেরেছি।'

'আমি খেলোয়াড়দের একটা কথা বলেছি, এই উইকেটে ইতিবাচক চিন্তা ছাড়া খেললে অনেক কঠিন হবে। যেহেতু আমরা (প্রথম ইনিংসে) লিড পেয়েছি ১৮ রানের, এখানে রান করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে এই উইকেটে যদি আমরা ২৫০ রান করতে পারি, আমাদের জন্য ম্যাচটা জেতা সহজ হবে। বার্তাটা এই ছিল যে খেলোয়াড়েরা ইতিবাচক খেলবে।'

এই টেস্টের নানান ধাপে সংকট পার করতে হয়েছে বাংলাদেশককে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামার সময় অসুস্থ হয়ে যান মুমিনুল হক, তিনি নামতে পারেননি তার নিজের পজিশন তিন নম্বরে। ব্যাটিং অর্ডার হয় কিছুটা উলটপালট। মিরাজ জানালেন সেই গল্প,  'সৌরভ ভাই (মুমিনুল) অসুস্থ হওয়ার পর দলের সবাই আড়ষ্ট হয়ে পড়েছিল। ওই জায়গায় (পজিশন) ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন। কিন্তু দীপুকে (শাহাদাত) আমি বলেছিলাম, ও রাজি হয়েছে। ওকে আমি একটা কথা বলেছিলাম, এই উইকেটে তুমি ইতিবাচক খেলো। যদি মনে করো, প্রথম বলটাই মারার, তুমি প্রথম বলেই মারো। তোমাকে কেউ কিছু বলবে না। আমি তোমাকে অভয় দিলাম। ও সেভাবেই খেলেছে। ওর ২৮টা রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমিও চারে একই মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। কারণ, এই উইকেটে রানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। খেলোয়াড়দের প্রতি বার্তাটাই এটা ছিল, ১টা রানও খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিটি খেলোয়াড় যেন রানের জন্য ক্রিকেট খেলে। এর মানে এই না যে টেস্ট ক্রিকেট, ঠেকাব—আমরা এই পরিকল্পনায় খেলেছি।'

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

12h ago