ইইউতে রপ্তানি কমতে পারে ২০ শতাংশ

ইইউতে রপ্তানি
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশের উঠে আসা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভিয়েতনামের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (ইভিএফটিএ) প্রভাবে ইইউতে বাংলাদেশের সামগ্রিক রপ্তানি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।

রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক গতকাল বুধবার ঢাকায় এক সেমিনারে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, 'ইভিএফটিএর জন্য বাণিজ্য পরিবর্তনের কারণে ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি এক দশমিক আট শতাংশ এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য সাড়ে ছয় শতাংশ কমবে বলে জানানো হচ্ছে।'

'২০০২ সালে উভয় দেশের একই ধরনের চালান থাকা সত্ত্বেও ২০২৩ সালের মধ্যে ইইউতে ভিয়েতনামের রপ্তানি দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।'

তার মতে, 'ভিয়েতনাম পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশ এখনো দৃশ্যমান কিছু করতে পারেনি, সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে।'

২০২০ সালে কার্যকর হওয়া ইভিএফটিএর মাধ্যমে ভিয়েতনামকে আগের স্ট্যান্ডার্ড জেনারালাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সেসের (জিএসপি) পরিবর্তে ইইউ বাজারে বিনা শুল্কে বাণিজ্য সুবিধা দেওয়া হয়।

শুল্ক তুলে নেওয়া ছাড়াও ইভিএফটিএ শুল্কহীন বাধাগুলো মোকাবিলা, পরিষেবা ও বিনিয়োগের জন্য বাজার খুলে দেয় এবং ভিয়েতনামকে ইইউর শ্রম ও পরিবেশগত মানের সঙ্গে মিলিয়ে নেয়। সম্মিলিতভাবে প্রতিযোগিতা ও বিনিয়োগের পথকে প্রশস্ত করে।

বর্তমানে 'এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)' কর্মসূচির আওতায় ইইউয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। এটি সেখানে পোশাক রপ্তানি বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।

তবে এ সুবিধা শুধু স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর বাংলাদেশ এ সুবিধা হারাতে পারে।

একই সময়ে, বাংলাদেশ নীতি বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকলেও ভিয়েতনাম সময়োপযোগী ও কৌশলগত নীতি ব্যবস্থা নিয়ে কার্যকরভাবে ব্যবসার পরিবেশ সুসংহত এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়িয়েছে।

মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক মনে করেন, 'বাংলাদেশ যদি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চায়, বিশেষ করে বৈশ্বিক বাণিজ্য বিধিমালা বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজসহ অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।'

তার ভাষ্য, 'বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং ভিয়েতনামের রপ্তানি আরও বহুমুখী। বিশ্ব পোশাক বাজারে চীনের পণ্য কমে যাওয়ায় যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামও একই গতিতে পূরণ করছে।'

তিনি জানান, ইইউয়ে চীনের বাজার দখল করেছে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, 'উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর মোট রপ্তানি কমার আশঙ্কা নেই।'

তার মতে, চীন ও ভিয়েতনামে শ্রম সংক্রান্ত সমস্যার পাশাপাশি শ্রমিকরা পোশাকশিল্পে কম আগ্রহী হওয়ায় সেসব দেশ থেকে কার্যাদেশ বাংলাদেশে চলে আসতে পারে।

তিনি বাংলাদেশে শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানি সংকট ও ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতাসহ অন্যান্য সমস্যার কথাও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীও বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English

Interim govt not taking action following white paper: Economists

The makers of the white paper criticised the government for increasing value-added tax

45m ago