নির্বাচনের ডেডলাইন দিতে এত দ্বিধা কেন: রিজভী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে জনসমাবেশে বক্তব্য দেন রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ৫ আগস্টের চেতনাকে ধারণ করতে পারছেন না, তাই বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরদের বসিয়ে রেখেছেন। তারা আপনাকে ব্যর্থ করবেই।    

আজ মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। 

নতুন উপদেষ্টা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, 'নতুন উপদেষ্টা করেছেন, সে অধিকার আপনার আছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশীজন যারা তাদের অভিমত নেওয়া দরকার ছিল। যে মেয়েটি বিতর্কিত শেখ মুজিবের বায়োপিক ছবিতে অভিনয় করেছেন আপনারা তার স্বামীকে উপদেষ্টা বানিয়েছেন।'

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আপনি জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার হয়েছেন। আপনাদের বিএনপি সমর্থন করেছে। যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে তারা সমর্থন দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সমর্থন দিয়েছে। আমরা তো আপনাদেরকে সমর্থন করে যাচ্ছি। কিন্তু মাঝে মাঝে কথা বলতে হয় কেন।'

'আলুর কেজি কেন হবে ৭৫-৮০ টাকা। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন? আপনি সিন্ডিকেটবাজদের কেন গ্রেপ্তার করতে পারছেন না? দুর্বলতা কোথায় এটা একটু জানতে চাই। এটাতো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের কাম্য নয়। কেন এটা বাড়ছে, মানুষতো অনেক ধরনের প্রশ্ন করে,' বলেন রিজভী।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'আপনি নির্বাচনের কথা বলেন, কিন্তু নির্বাচনের কোনো ডেডলাইন দেন না। এত দ্বিধা কেন? এটা তো রহস্যজনক। আপনারা সংস্কার করবেন। সবাই মনে করে অন্তবর্তীকালীন কী, স্কুলের হেডমাস্টার? আপনারা সংস্কারের একটা সিলেবাস তৈরি করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে আগে শিক্ষাদান করবেন। মনে হচ্ছে এটাই ইচ্ছা। তারা এখন স্কুলের হেডমাস্টার বা শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। আপনারা মনে করছেন বিএনপির লোক যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছে তারা অশিক্ষিত। আগে সংস্কার শিখাই, তারপর তোমরা নির্বাচনের কথা বলো।'  

এক উপদেষ্টার বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, 'তাদের একজন উপদেষ্টা বলছে, খালি নির্বাচন নির্বাচন করলে হবে। উপদেষ্টাকে বলি আপনি কী হেডমাস্টার? আমরা কি জানিনা সংস্কার কী? আপনারা প্রস্তাব দিতে পারেন। সেই প্রস্তাবটা দেবেন নির্বাচিত সরকারে কাছে। এজন্য নির্বাচন দিন।'

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মনে করেছিল তার বাপের জমিদারি। আর এই জমিদারি রক্ষার্থে সে দেশের জনগণকে জনগণ মনে করত না, চাকর-বাকর মনে করত। যারা প্রতিবাদ করেছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় বক্তব্য রেখেছে, যারা মিছিল করেছে, জনসভা করেছে, স্লোগান দিয়েছে তাদের সে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। কাউকে অদৃশ্য করে দিয়েছে চিরদিনের জন্য। এই দানবকে বাংলাদেশর ছাত্ররা বিতাড়িত করেছে।'

'ভারতের আদানির সঙ্গে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক দামে চুক্তি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। যারা বিদ্যুতের সিন্ডিকেট করেছে, তারা বিভিন্নভাবে সিন্ডিকেট করেছে। সেই সিন্ডিকেটের টাকা কি আপনি আপনার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে গেছেন? এটা জনগণের জিজ্ঞাসা, এটাই জনগণ আজকে জানতে চায়। আমরা বিদ্যুতের টাকা পাচার হওয়ার কথা শুনেছি, মেট্রোরেলের টাকা পাচার হওয়ার কথা শুনেছি। মেগা প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাৎ হওয়ার কথা শুনেছি। যার খেসারত জনগণকে দিতে হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে দিতে হচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।      

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

Hamas responds to Gaza ceasefire proposal, it's 'positive': Palestinian official

US President Donald Trump earlier announced a "final proposal" for a 60-day ceasefire in the nearly 21-month-old war between Israel and Hamas, stating he anticipated a reply from the parties in coming hours

2h ago