রঙিলা কিতাব: ভালোবাসা ও বিশ্বাসঘাতকতার গল্প

রঙিলা কিতাব
রঙিলা কিতাবে পরিমনি ও মোস্তাফিজ নূর ইমরান। ছবি: সংগৃহীত

অনম বিশ্বাস পরিচালিত ওয়েব সিরিজ 'রঙিলা কিতাব' ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইতে ৮ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে। কিঙ্কর আহসানের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এই সিরিজ। আট পর্বের ওয়েব সিরিজটি কেমন হয়েছে তার কিছুটা সন্ধান করা যাক।

'রঙিলা কিতাব' ওয়েব সিরিজজুড়ে মূলত প্রদীপ আর সুপ্তির ফেরারি জীবনের গল্প। তাদের এই শ্বাসরুদ্ধকর ফেরারি জীবনের গল্প দেখতে দেখতে কখনো মনে হবে, এটা সুপ্তি আর প্রদীপের গভীর ভালোবাসার কাহিনী। আবার কখনো মনে হবে এটা প্রদীপের বিশ্বাসঘাতকতার গল্প। যেহেতু কয়েকদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে, পুরো গল্পটা দর্শকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার ইচ্ছে নেই।

'রঙিলা কিতাব' ওয়েব সিরিজে সুপ্তি ওরফে পরীমনি তার সেরা অভিনয় করার একটা চেষ্টা করেছেন। প্রথম দৃশ্য থেকে শুরু করে পুরো সিরিজে নিজের দিকে দৃষ্টি নিতে চেয়েছেন।

চরিত্রের প্রয়োজনে কিছুটা ওজন বাড়িয়ে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর চরিত্র ফুটিয়ে তুললেন, অনায়াসে সুপ্তি হয়ে গেলেন। মা হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তগুলোর অভিনয় ঠিকঠাক চেষ্টায় সফল হলেন। স্বামী মারা যাওয়ার দুই বছর পর শেষ দৃশ্যে সন্তান নিয়ে ফেরারি জীবন শেষে যখন নিজের এলাকায় বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে রহস্যময় দৃষ্টিতে তাকান, সেই দৃষ্টি অনেক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় দর্শকদের মাঝে।

ছবি: সংগৃহীত

প্রদীপ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান। প্রথম দৃশ্য থেকেই অভিনয়, অভিব্যক্তি, অ্যাকশনে সাবলীল ছিলেন। প্রেমিক, রাগী চরিত্র হয়ে উঠতে যতটা প্রয়োজন, ঠিক ততখানিই অভিনয় করেছেন। স্ত্রী সুপ্তির জন্য উথাল প্রেম, অপরাধবোধ, প্রতিশোধের নেশা চোখে-মুখে ছড়িয়ে কী অসাধারণ অভিনয় করলেন। নওরোজ চরিত্রের ফজলুর রহমান বাবুকে গুলি করার আগে-পরে নূরের অভিনয় মনের মধ্যে গেঁথে থাকবে।

নওরোজ চরিত্রের ফজলুর রহমান বাবুর দুর্ধর্ষ অভিনয় মন কাড়বে। অভিনয়ের গুণে বরাবরের মতোই মনোযোগ কেড়েছেন। মনোজ প্রামাণিক ভালো অভিনয় করেছেন, কিন্তু চরিত্রের শেষ গন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। একই কথা বলা যায় ইরেশ যাকেরের ক্ষেত্রেও। তানভীন সুইটি ছোট একটি চরিত্রে অল্প অভিনয় করেছেন। কিন্তু তাকে মানানসই লেগেছে। তবে শিমুল শর্মা নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পাননি এই সিরিজে।

ছবি: সংগৃহীত

নির্মাতা হিসেবে অনম বিশ্বাস তার চেনা ছক থেকে বেরিয়ে এই অ্যাকশনধর্মী ওয়েব সিরিজ বানিয়েছেন, যা সত্যি প্রশংসনীয়। এই ওয়েব সিরিজের আবহসংগীত কানে প্রশান্তি দিয়েছে। কোনোরকম বিরক্তির জন্ম দেয়নি। এ ছাড়া লোকেশনের বৈচিত্র‍্য চোখ জুড়িয়েছে।

'রঙিলা কিতাব' সিরিজে বরিশালের স্বরূপকাঠি অঞ্চলের গল্প বলা হয়েছে। গল্প বলতে গিয়ে গুলি করে হুটহাট অনেক খুনের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। এটা কাহিনীর জন্য ঠিক আছে, কিন্তু বাংলাদেশে কোনো এলাকায় এত সহজে কি খুন করা যায়? এ ছাড়াও বেশকিছু বিষয়ে কথা বলার জায়গা আছে। এইসব কিছু এড়িয়ে দর্শকরা ওয়েব সিরিজটি  দেখে নিতে পারেন, মন্দ লাগবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

8h ago