লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত নিজামের মরদেহ দেশে ফেরাতে জটিলতা

এখন সবার অপেক্ষা, নিজামের মরদেহ কখন আসবে। ছবি: স্টার

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত বাংলাদেশি মোহাম্মদ নিজামের মরদেহ দেখার সুযোগ হবে কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার। 

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে লেবাননে ফ্লাইট না থাকায় প্রবাসী এই বাংলাদেশির মরদেহ দেশে আনা সম্ভব নয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানোর পর তার পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নিজাম দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। তার দেশে ফেরার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না বলেও জানিয়েছে পরিবার।

নিজামের বড় বোন সায়েরা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রায় ১২ বছর আগে সাত লাখ টাকা ধার-দেনা করে লেবাননে পাড়ি জমিয়েছিলেন নিজাম। তবে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ভাগ্য তার সহায় হয়নি। 

মারা যাওয়ার তিন দিন আগেও নিজাম দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেকথা জানিয়ে তার আরেক বড় বোন পারুল বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েকদিন আগে নিজাম আমাকে বলেছে লেবাননের পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে আমি এখনো পর্যন্ত ভালো আছি। তোমরা আমার জন্য দোয়া করো। আমি কাগজপত্র ঠিকঠাক করে দেশে ফিরে আসব।'

আজ রোববার দুপুরে নিজামের গ্রামের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে শোকের মাতম দেখা যায়। নিজামকে হারিয়ে হতদরিদ্র এই পরিবারের সদস্যরা নির্বাক হয়ে পড়েছেন। 

সবার বড় বোন সায়েরা বেগম ডেইলি স্টারকে জানান, নিজামের বয়স যখন ছয় বছর তখন বাবা মারা যান। অভাব-অনটনের কারণে জীবিকার সন্ধানে তিনি লেবাননে যান। তখন মা বেঁচে থাকলেও পাঁচ বছর আগে মারা যান। এরপর থেকে পরিবারের সবাই নিজামের ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন। এখন সবার অপেক্ষা, নিজামের মরদেহ কখন আসবে। 

নিজামের ভগ্নীপতি জানে আলম ডেইলি স্টারকে জানান, লেবাননে নির্ধারিত চাকরি না পাওয়ায় নিজামের আয় ভালো ছিল না। তাছাড়া বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেখানে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হন। এতদিন বিদেশে থেকে মায়ের জন্য একটা ছোট্ট একটি টিনের ঘর করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। 

নিজামের একমাত্র বড় ভাই জালাল মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে লেবাননে নাকি সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ। এ অবস্থায় নিজামের মরদেহ কীভাবে দেশে আনা হবে তা নিয়ে আমরা সবাই চিন্তায় আছি। তার মরদেহ দেশে আনতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।'

এ বিষয়ে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খবর পাওয়ার পর আমরা নিহতের পরিবার ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। নিজামের মরদেহ ফিরিয়ে আনার জোর প্রচেষ্টা চলছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Seven killed in Mymensingh road crash

At least seven people were killed and several others injured in a head-on collision between a bus and a human haulier in Mymensingh’s Phulpur upazila last night

1d ago