শসা কেন খাবেন

শসার উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

শসা একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সবজি যেটি বছরের সবসময় পাওয়া যায়। শসা বিভিন্নভাবে শরীরের উপকার করে। নিয়মিত শসা খেলে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ হয়।

আজকে জানব শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। এ বিষয়ে জানিয়েছেন সিলেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের ডায়াবেটিস এডুকেটর ও পুষ্টিবিদ স্বর্ণালী দাশ বিজয়া।

পুষ্টিবিদ স্বর্ণালী দাশ বিজয়া বলেন, শসার রয়েছে নানা ভেষজ গুণ। ত্বকের যত্নে, পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখতে, অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে শসার বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শসা রাখার চেষ্টা করা উচিত।

পুষ্টি উপাদান:

১০০ গ্রাম শসা থেকে পাওয়া যায়

ক্যালরি - ১৫.৫ গ্রাম

প্রোটিন - ০.৬৪ গ্রাম

কার্বহাইড্রেট- ৩.৭৮ গ্রাম

ফ্যাট - ০.১১ গ্রাম

ডায়াটারি ফাইবার - ০.৬২ গ্রাম

মনোস্যাকারাইড - ১.৭০ গ্রাম

এ সব উপাদান ছাড়া ও রয়েছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।

উপকারিতা

  • অল্প ক্যালরিযুক্ত খাবার শসা। এটি খেলেই পেট ভরে যায়, অথচ সেভাবে ক্যালরি প্রবেশ করে না শরীরে। কারণ ১০০ গ্রাম শসায় মাত্র ১৫.৫ ক্যালরি থাকে। এতে চর্বি এবং শর্করা খুবই কম পরিমাণে থাকে, কিন্তু এটি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভব হয়, যা অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে। ফলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় খাদ্যতালিকায় অপরিহার্য শসা।
  • শসার মধ্যে ৯৬ ভাগ পানি বিদ্যমান থাকায় শসা দেহের পানির ঘাটতি পূরণ করে। গরমকালে শরীর আর্দ্র রাখতে শসা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শসা হজমেও সহায়ক হয়। পেট পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে। শসা ও পুদিনা ভালো ডিটক্স ওয়াটার হিসেবে ব্যবহৃত হয় যা দেহ থেকে টক্সিন দূর করে।
  • শসায় থাকে ভিটামিন কে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও রক্তসঞ্চালনে সাহায্য করে। শসায় রয়েছে ভিটামিন সি, যা রোগপ্রতিরোধে সহায়ক।
    স্বর্ণালী দাশ বিজয়া।
  • শসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। ত্বকের রোদে পোড়াভাব কমায়। মুখের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও স্কিন ইনফেকশন যেমন একজিমা নিরাময় করে এবং এতে চোখের প্রদাহপ্রতিরোধক উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে। শসা গোল করে কেটে ১০ মিনিট দুই চোখের ওপর দিয়ে রাখলে চোখের ফোলাভাব কমে।
  • শসা চুলের গ্রোথ বাড়ায়। শসাতে বিদ্যমান খনিজ সিলিকা আমাদের চুল এবং নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে।
  • শসার বিটা ক্যারোটিন শরীরে ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শসায় বিদ্যমান পানি আমাদের দেহের বর্জ্য এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে যা আমাদের রক্তকে পরিষ্কার করে এবং এর পাশাপাশি শসার রস আলসার, গ্যাসট্রাইটিস, এসিডিটির ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করে।
  • শসায় থাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে পরোক্ষভাবে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। উচ্চরক্তচাপের রোগীরা যাদের কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা নেই ওরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন শসার জুস খেলে ভালো ফল পাবে।
  • শসায় রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, যা হজমের জন্য ভালো। পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়ক। এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ট্যানিন, যা প্রদাহ কমাতে কার্যকর।
  • শসা ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শসা খাওয়া উপকারী। শসার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম, অর্থাৎ এটি রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা বৃদ্ধি করে না। শসা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।

সতর্কতা

অনেকেই শসা লবণ দিয়ে খেতে পছন্দ করে থাকেন। লবণ দিয়ে খেলে শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা কমে যায়। তাই লবণ ছাড়া শসা খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

 

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

3h ago