এনটিআরসিএ পরীক্ষা ২০২২: এখনও সুপারিশের অপেক্ষায় ৭৬ চাকরিপ্রার্থী

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে সব ধরনের যোগ্যতা পূরণ সত্ত্বেও চূড়ান্ত সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অন্তত ৭৬ জন চাকরিপ্রার্থী। এমনই দাবি করছেন তারা।

স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারী আবেদনকারীরা দাবি করছেন, তারা এনটিআরসিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং ২০২২ সালের বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী মৌলভী ও সহকারী শিক্ষক (ধর্ম) উভয় পদের জন্য বিধি অনুযায়ী নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন।

এই প্রার্থীদের অভিযোগ, ২০২৩ সালের প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে এনটিআরসিএ অন্যায়ভাবে তাদের নাম সুপারিশ করেনি।

তারা আরও অভিযোগ করেন, তাদের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়া একই যোগ্যতার অপর ৫৫ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে।

ফলে, এই ৭৬ জন কোনো কর্মস্থলে যোগদান করতে পারেননি।

এই আবেদনকারীরা আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে আবেদন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো ফল পাননি।

চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, তারা 'স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে পাস করেছে। তারা যখন এই পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলেন, তখন মাদ্রাসা এমপিও নীতি ২০১৮-তে উল্লেখ ছিল, প্রার্থীদের অবশ্যই 'স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে স্নাতক হতে হবে। ২০২০ সালের নভেম্বরে সংশোধন করে সেখান থেকে 'স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়' শব্দটি সরিয়ে দেওয়া হয়।

এই সংশোধন হওয়ার পরও ২০২১ সালে তৃতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য এমন অনেক প্রার্থীকে সুপারিশ করা হয়েছিল, যারা 'স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে পাস করেছেন। তাদের এমপিও তালিকাতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

একইভাবে, চতুর্থ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও একই ধরনের প্রার্থীরা চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়ে এমপিওভুক্ত হন। এমনকি পঞ্চম বিজ্ঞপ্তিতেও এমন প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে।

কিন্তু এই ৭৬ জন প্রার্থীর দাবি, তারা চূড়ান্ত সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

এমনই এক প্রার্থী মহিদুল ইসলাম বলেন, 'একাধিক আবেদন করেও ৭৬ জন প্রার্থীর বিষয়ে কোনো সমাধান আমরা পাইনি। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চরম বৈষম্য ও হতাশায় ভুগছি।'

আরেক প্রার্থী আজিজ মিয়া বলেন, '২০১৮ সালের নীতিমালার অধীনে  অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারী সহকারী মৌলভী প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছিল এবং ২০২১ সালের তৃতীয় বিজ্ঞপ্তিতে এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। অনেককে ফাজিল সার্টিফিকেট অনুযায়ী চতুর্থ বিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজন পঞ্চম বিজ্ঞপ্তিতেও চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছেন।'

'কিন্তু আমরা ৭৬ জন গত এক বছরে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সমাধান পেলাম না,' যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব রিজওয়ানুল হক বলেন, 'কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে এমন চিঠি জমা দেওয়ার কথা শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'

তবে, এর বেশি আর কিছু হয়েছে কি না, তা তিনি বলতে পারেননি।

যোগাযোগ করা হলে এনটিআরসিএ শিক্ষা ও মান বিভাগের সহকারী পরিচালক ফারজানা রসুল বলেন, 'যথাযথ কারণ ছাড়া চূড়ান্ত সুপারিশ থেকে তাদের বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হয়তো তারা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা মানদণ্ড পূরণ করেননি।'

একই ধরনের সার্টিফিকেট ও যোগ্যতা সম্পন্ন অন্য প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, 'এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Banking sector crisis

Why is the banking sector crisis so deep-rooted?

The regime-sponsored immorality to protect or pamper the financial gangsters not only eroded the future of the banking sector, but also made the wound too difficult to recover from.

4h ago