১ মাসেই ৪৬ হাজার ৫১০ কোটি রুপি ঋণ নিয়ে সমালোচিত শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। ফাইল ছবি: দ্য আইল্যান্ড শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। ফাইল ছবি: দ্য আইল্যান্ড শ্রীলঙ্কা

সম্প্রতি দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার দশম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের এক মাসেরও কম সময়ে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম ডেইলি মিরর।

২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই অর্থ বাজারে ৪৬ হাজার ৫১০ কোটি রুপি মূল্যমানের সরকারি ট্রেজারি বিল ছেড়েছে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ট্রেজারি বিলের বিনিময়ে দেশের জনগণের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার।

সরকারের ব্যাখ্যা

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের অর্থনীতি ও আর্থিক বিষয়ক উপদেষ্টা অনিল জয়ন্ত ফার্নান্দো। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের অর্থনীতি ও আর্থিক বিষয়ক উপদেষ্টা অনিল জয়ন্ত ফার্নান্দো। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

তবে এ বিষয়ে সরকারের এক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, এটি কোনো বাড়তি ঋণ নয়, বরং পুরনো ঋণ পরিশোধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গতানুগতিক উদ্যোগ। 

প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক ও আর্থিক উপদেষ্টা অধ্যাপক অনিল জয়ন্ত ফার্নান্দো দ্য ডেইলি মিররকে জানান, ৪৬ হাজার ৫১০ কোটি রুপির মধ্যে ৪০ হাজার কোটি রুপিই খরচ করা হবে আগের ঋণ পরিশোধের জন্য।

তিনি জানান, এটা কোনো নতুন উদ্যোগ নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময় ঋণ পরিশোধের জন্য ট্রেজারি বিল অর্থ বাজারে ছাড়ে। এটি 'রুটিন' কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়, মন্তব্য করেন ফার্নান্দো।

অধ্যাপক ফার্নান্দো আরও জানান, বর্তমান সরকার আগের সরকারের অনুমোদন দেওয়া সীমার মধ্যে থেকেই ঋণ নিয়েছে।

'ট্রেজারি বিল ইস্যু করায় আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতায় কোনো প্রভাব পড়বে না এবং লাগামহীন ভাবেও ঋণ নেওয়া হচ্ছে না। বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে', যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, বিরোধী পক্ষরা দাবি করছে, নতুন সরকার অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে।

'কিন্তু তারা ট্রেজারি বিল ইস্যু করার নেপথ্যের কারণগুলো সম্পর্কে অবগত নন। বিনা কারণে তারা জনমনে ভয়-আশঙ্কা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেও তারা এসব অপচেষ্টা চালিয়েছিলেন', যোগ করেন অধ্যাপক ফার্নান্দো।

বিরোধী দলের অভিযোগ

শ্রীলঙ্কার বিরোধীদলের সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য রোহিনি কবিরত্নে। ফাইল ছবি: দ্য আইল্যান্ড
শ্রীলঙ্কার বিরোধীদলের সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য রোহিনি কবিরত্নে। ফাইল ছবি: দ্য আইল্যান্ড

সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) দল অভিযোগ করেছে, সরকার লাগামহীনভাবে ঋণ নিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের জনগণের কোনো উপকারে আসছে না। ১৩ দিনের মধ্যে সরকার ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিনিময়ে ৪১ হাজার ৯০০ কোটি রুপি ঋণ নিয়েছে।

এসজিবির সাবেক আইনপ্রণেতা রোহিনি কবিরত্নে এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার ২ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে।

কবিরত্নে বলেন, 'সরকার এখনো গত দুই মাসের পেনশনের অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি। মনে হচ্ছে, তারা সরকারি কর্মকর্তাদের বর্ধিত বেতন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে।'

তিনি অভিযোগ করেন, গত কয়েকদিন সরকার দৈনিক তিন হাজার ৩২৩ কোটি রুপি ঋণ নিয়েছে। যার অর্থ তারা ঘণ্টায় ১৩৪ কোটি রুপি করে ঋণ নিচ্ছে।

সাবেক এই পার্লামেন্ট সদস্য সরকারকে এই ঋণের অর্থ কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে, তার বিস্তারিত জানানোর দাবি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Bees & bucks: Beekeeping boosts rural incomes

From December to February, mustard fields across Bangladesh become buzzing ecosystems as bees, both wild and domesticated, diligently go from flower to flower in search of their most precious commodity: nectar.

12h ago