হিজবুল্লাহর ড্রোন ঠেকানোই এখন ইসরায়েলে মূল আলোচনা

ইসরায়েল অভিমুখে হিজবুল্লাহর ড্রোন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েল অভিমুখে হিজবুল্লাহর ড্রোন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

হাইফা শহরের দক্ষিণে বিনইয়ামিনায় ইসরায়েলি সামরিক প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন চার সেনা। আহতের সংখ্যা ৬৭ ছাড়িয়েছে। রাডার ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ফাঁকি দিয়ে এই হামলা চালায় হিজবুল্লাহ।

কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করল লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ, সে বিষয়টি বিস্তারিত জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

রাফায়েল কোম্পানির তৈরি আয়রন ডোম আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: রাফায়েলের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
রাফায়েল কোম্পানির তৈরি আয়রন ডোম আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: রাফায়েলের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

এই হামলায় হিজবুল্লাহ ব্যবহার করেছে মিরসাদ-১ নামের ড্রোন। আলমা রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি ইরানের মোহাজের-২ ড্রোনের আদলে নির্মিত। হিজবুল্লাহর অভিযানের সুবিধার্থে এতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এই ড্রোন ঊর্ধ্বে ৪০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৭০ কিমি বেগে লক্ষ্যের দিকে ধেয়ে যেতে পারে এবং সর্বোচ্চ ১২০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।

২০০২ সাল থেকে নজরদারি ও হামলায় এই ড্রোন ব্যবহার করে আসছে হিজবুল্লাহ।

বিশেষ কৌশলে হামলা

হিজবুল্লাহর ড্রোন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হিজবুল্লাহর ড্রোন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিনইয়ামিনার হামলায় একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে হিজবুল্লাহ। এক ঝাঁক রকেটের নিচে ড্রোন পাঠায় তারা। উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করা। অন্তত একটি ড্রোন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়। এটি বিনইয়ামিনায় আছড়ে পড়ে, যা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লঙ্ঘনের বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি ডেইলি জানিয়েছে, এর আগেও মিরসাদ-১ ড্রোন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়েছিল। এ বছরের শুরুতে হিজবুল্লাহর কয়েকটি ড্রোন বেশ কয়েক মিনিটের জন্য ইসরায়েলি আকাশ সীমায় ঢুকে পড়ে। কয়েক মিনিট ঘুরেফিরে নির্বিঘ্নে ড্রোনগুলো আবারও অক্ষত অবস্থায় লেবাননে ফিরে আসে।

শুধু মিরসাদ-১ নয়, হিজবুল্লাহর কাছে ইরানে নির্মিত শাহেদ ও মোহাজের-৪ এর মতো অত্যাধুনিক ড্রোনও রয়েছে। আলমা রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদন মতে, সংগঠনটির কাছে বিভিন্ন মডেল মিলিয়ে মোট দুই হাজার ড্রোন রয়েছে।

আয়রন ডোম 'প্রশ্নবিদ্ধ'

ইসরায়েলের আশকেলনে আয়রন ডোম ব্যাটারির অংশবিশেষ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের আশকেলনে আয়রন ডোম ব্যাটারির অংশবিশেষ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিনইয়ামিনার এই হামলায় ইসরায়েলের আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 'আয়রন ডোমের' কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর হলেও এটি মিরসাদ-১ এর মতো ছোট, কম উচ্চতায় উড়তে সক্ষম ড্রোন চিহ্নিত করতে হিমশিম খাচ্ছে বলেই মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

আইডিএফ ইতোমধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। বিনইয়ামিনার হামলার সময় কেন বাজেনি সতর্কতাসূচক অ্যালার্ম, সেটা তারা এখন খতিয়ে দেখছে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, ইসরায়েলে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়ে হিজবুল্লাহর ড্রোন। এক বছরব্যাপী গাজার যুদ্ধে হামাস তেমন মাথা ব্যথার কারণ না হলেও হিজবুল্লাহর ড্রোন সক্ষমতা নেতানিয়াহুকে চিন্তিত করেছে। 

Comments

The Daily Star  | English

Yunus returns home completing 4-day Japan tour

A flight of Singapore Airlines, carrying the CA landed at Hazrat Shahjalal International Airport at 12:15am on Sunday

1h ago