৪৪ বছর পর কেন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চীনের?

চীনের তৈরি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)। ছবি: রয়টার্স

প্রশান্ত মহাসাগরে সফলভাবে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে নকল বিস্ফোরকসহ ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি চীনের বাৎসরিক মহড়ার অংশ। 

কোনো দেশ বা লক্ষ্যবস্তুর উদ্দেশ্যে ক্ষেপণাস্ত্র চালানো হয়নি দাবি করে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে এ ব্যাপারে আগাম বার্তা দেওয়া হয়েছিল। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, বেইজিংয়ের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে 'বাৎসরিক মহড়ার অংশ' দাবি করাটা বিস্ময়কর। কারণ তারা সর্বশেষ এ ধরনের পরীক্ষা চালিয়েছিল ১৯৮০ সালে।

চীনের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা সাধারণত দেশের ভেতরেই হয়ে থাকে। শেষবার তারা পরীক্ষামূলকভাবে আইসিবিএম উৎক্ষেপণ করেছিল জিনজিয়াং অঞ্চলের তাকলামাকান মরুভূমিতে। 

১৯৮০ সালের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক জলসীমায় আইসিবিএম উৎক্ষেপণ করল দেশটি।

সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ড্রিউ থম্পসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, 'চীনের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি কোনো দেশকে লক্ষ্য করে উৎক্ষেপণ করা হয়নি। কিন্তু চীনের সঙ্গে জাপান ও ফিলিপাইনের ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাইওয়ানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা তো আছেই।' 

এদের সবাইকে ভয় দেখানোর জন্য চীন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে থাকতে পারে বলেও দাবি করেন তিনি। 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক জন রিজ বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত দিয়েও এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে চীন।'

জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাদের কোনো জাহাজ বা নৌপরিবহনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। চীনের সামরিক বাহিনীর গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ অব্যাহত রাখছে তারা। 

বিতর্কিত জলসীমায় বারবার জাহাজের সংঘর্ষ হওয়ায় চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। গত মাসে চীনের একটি গোয়েন্দা বিমান জাপানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল জাপান। এ ছাড়া, স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানকে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে আনার চেষ্টা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

বুধবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীন 'নিবিড়' ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও অন্যান্য সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। তাইওয়ানের চারপাশে মিশনে থাকা ২৩টি চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত করেছে তারা।

তাইওয়ানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান অস্ত্র বিক্রির প্রতিক্রিয়া হিসেবে চলতি বছরের জুলাই মাসে ওয়াশিংটনের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা স্থগিত করে চীন।

গত বছর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পেন্টাগন দাবি করে, চীনের অস্ত্রাগারে ৫০০টিরও বেশি সক্রিয় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩৫০টিই আইসিবিএম।
 

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago