সরবরাহ কম, ইলিশ এখন আরও দামি

ছবি: মোকাম্মেল শুভ

চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ কমে যাওয়ায় বরিশাল ও কক্সবাজারের স্থানীয় বাজারে বেড়েছে ইলিশের দাম।

বরিশালে একদিনের ব্যবধানে মণপ্রতি ইলিশের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানান, ইতোমধ্যে ইলিশের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। আগামী এক সপ্তাহে তা আরও অন্তত ১০০-২০০ টাকা বাড়বে।

তাদের দাবি, ইলিশের সরবরাহ কম হলেও দেশের বাজারে ও রপ্তানি চাহিদা পূরণের কারণেই দাম বেড়েছে।

বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডের ইলিশের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, শনিবার ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের যে ইলিশের মণ ছিল ৬০ হাজার টাকা, রোববার তা ৬৪ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির বেশি ওজনের মাছের মণ আগের দিনের ৬৮ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৭৩ হাজার টাকা হয়েছে। 

এই মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী জহির সিকদার জানান, বাজারে মাছের চাহিদা বেশি, আমদানি কম। সেই সঙ্গে ভারতে রপ্তানির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে রাখতে শুরু করায় হঠাৎ করে বাজারে চাহিদা বেড়েছে। এলসি আকার থেকে কেজি আকারের মাছ কেজিপ্রতি অন্তত ১০০ টাকা বেড়ে গেছে। 

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, বাজারে মাছের চাহিদা বাড়ায় দাম কেজিপ্রতি অন্তত ১০০ টাকা বেড়েছে। দামবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে। 

আলীপুর মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল বাজারে ৩০০ মণ ইলিশ পাওয়া গিয়েছিল। এখানে ৬০০-৭০০ গ্রাম সাইজের মাছ ৫২ হাজার, ৮০০-৯০০ গ্রাম ৬০ থেকে ৬২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু রোববার বাজারে দর মণপ্রতি দুই হাজার টাকা বেড়েছে। আগামী দিনে আরও বাড়বে। 

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রেও একই চিত্র দেখা গেছে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে পাইকারিতে দাম বেড়েছে।

এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকায় এবং ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ টাকায়।

এখানকার পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক বলেন, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে শনিবার থেকে মাত্র কয়েকটি ট্রলার এসেছে।

প্রতিটি ট্রলার ১০০ থেকে এক হাজার পিস ইলিশ নিয়ে আসছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম বলে জানান তিনি।

কক্সবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতি সরবরাহ কম হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। সমিতির সচিব দেলোয়ার হোসেন বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়া পরিস্থিতি এবং রপ্তানির চাপ দুটোই দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে মনে করেন।

চলতি সেপ্টেম্বরে এই কেন্দ্রে মোট ১০৮ দশমিক ৬০ টন ইলিশ বিক্রি হয়েছে।

এদিকে গত শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুলতানা আক্তারের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির আদেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরের মধ্যে আগ্রহী ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে। 

উপসচিব সুলতানা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত মাছের দর ঠিক করা হয়নি। কারা কারা মাছ রপ্তানি করতে পারবে, তা কাগজপত্র দেখে ঠিক করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছর ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে তিন হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত ৩৫টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে।' 

২০১৯ সাল থেকে সীমিত আকারে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয়ে থাকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ সালে ৪৭৬ টন, ২০২০-২০২১ সালে এক হাজার ৬৯৯ টন, ২০২১-২০২২ সালে এক হাজার ২৩০ টন, ২০২২-২০২৩ সালে এক হাজার ৩৯১ টন ও ২০২৩-২০২৪ সালে ৮০২ টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Can Bangladesh fend off Vietnam in RMG race?

Bangladesh’s status as the world’s second-largest garment exporter has become increasingly precarious, driven by a confluence of global trade shifts, regional competition and structural inefficiencies at home.

8h ago