নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বরিশালের বাজারে ইলিশ, ‘বিবর্ণ-বরফ দেওয়া’ বলছেন ক্রেতারা

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার প্রথম দিনে সোমবার বরিশাল পোর্টরোড মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে আসে ইলিশ। ছবি: টিটু দাস/ স্টার

ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই বরিশাল বিভাগের হাটবাজার ভরে গেছে ইলিশে। তবে মাছের ক্রেতারা বলছেন, এসব ইলিশের বেশিরভাগ তাজা নয়।

স্থানীয়রা বলছেন, এসব ইলিশ মাছ নিষেধাজ্ঞার সময়ে ধরা হয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার একদিন আগে ধরা হতে পারে।

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ছয় ঘণ্টা পর, বরিশাল পোর্ট রোডে ইলিশের পাইকারি বিক্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় অন্তত ৫০০ মণ ইলিশ মাছ সেখান এসেছে। যার অধিকাংশ ছিল বিবর্ণ ও বরফ দেওয়া।

এসব মাছ বেশ কয়েকদিন আগে ধরা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা তা অস্বীকার করেন।

ভোলা থেকে ট্রলারে মাছ নিয়ে এসেছেন লিটন মাঝি। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রাতে ধরা ১০ মণ মাছ নিয়ে তিনি বরিশাল পোর্ট রোড পাইকারি আড়তে এসেছেন।

ছয় ঘণ্টায় কীভাবে ১০ মণ ইলিশ মাছ পেলেন জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেননি।

পোর্ট রোড বাজার থেকে ইলিশ কেনেন জুয়েল সরকার। তিনি বলেন, 'মাছ কিনলাম। কিন্তু মাছ তাজা না। মনে হচ্ছে অনেকদিন আগে ধরা।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্রেতা বলেন, '৫-৬ ঘণ্টা আগে ধরা ইলিশ মাছ চকচক করে। দেখলেই বোঝা যায় এটা আজকে ধরা হয়েছে। কিন্তু বাজারের এসব ইলিশে বরফ দেওয়া, চকচকে রং নেই। দেখেই বোঝা যায় অনেকদিন আগে ধরা হয়েছে এসব মাছ।'

বরিশাল জেলার মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'বাজারে প্রচুর মাছ রয়েছে, তবে মাছের সাইজ ছোট। এসব মাছ নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার একদিন আগেও ধরা হতে পারে। জেলেরা সাধারণত নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই নদীতে নেমে পড়ে।'

তবে এসব মাছ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগের মাছ নয় বলে জানান তিনি।

বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, 'অনেক সময় মৎস্য ব্যবসায়ীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাছ সংরক্ষণ করে থাকেন। তবে আমরা কোল্ড স্টোরেজ এবং মাছ বাজারে কোনো মাছ সংরক্ষিত অবস্থায় পাইনি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ যদি মাছ সংরক্ষণ করে এখন বিক্রি করেন, তাহলে আমরা কী করতে পারি।'

বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশের মণ ৬৮ হাজার টাকা, এক কেজি সাইজের ইলিশের মণ ৬৫ হাজার টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫৮ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ৫১ হাজার টাকা, ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশের দাম নিষেধাজ্ঞার আগে যা ছিল তা থেকে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে কমেছে। তবে বড় আকারের ইলিশ মাছ খুবই কম। অধিকাংশ মাছ ডিম ছাড়া।

মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ইলিশ ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, এখানে নদীর ইলিশ মাছ অনেকটা কম। ২০০ মণের মতো হবে। জেলেরা সব সাগরে গেছে। সাগর থেকে এলে বোঝা যাবে, কীরকম মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে, বিভাগীয় মৎস্য অফিস জানিয়েছে, গত ২২ দিনে ৩ হাজার ৩৯৪টি অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই সময়ে আইন ভঙ্গ করায় ১ হাজার ১৫৭ টি মামলায় ৬৮১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। এ সময় ১৮ টনের বেশি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে।  জরিমানা করা হয়েছে ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Chhatra Dal rally begins at Shahbagh

BNP’s Acting Chairman Tarique Rahman joined the rally virtually as the chief guest

2h ago