‘মব জাস্টিস’: সুবিচার কোন পথে...
একটার পর একটা জন-উচ্ছৃঙ্খলতার খবর মিলছে। 'মব জাস্টিসে'র নামে মানুষ পিটিয়ে হত্যার প্রবণতা বাড়ছে। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটো ঘটনা পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছে। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। সংবাদপত্রে খবর এসেছে এরকম ঘটনা দেশের আনাচে-কানাচে ঘটেই চলেছে। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ঢাকায় ৩৮ দিনের মধ্যে চারজন নিহত হয়েছেন—যাত্রাবাড়ীতে দুজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন।
১১ আগস্ট ও ১৫ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরে তিনজনকে হত্যা করা হয়। ১২ আগস্ট গাজীপুরে দুই যুবককে হত্যা করা হয়। ১২ আগস্ট নাটোরে ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। ১৩ আগস্ট বরিশালে ২০ বছর বয়সী এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বগুড়ায় ৩১ আগস্ট ও ১৮ সেপ্টেম্বর দুইজনকে হত্যা করা হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা খুন হন। ৪ সেপ্টেম্বর খুলনায় ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ৫ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ফরিদপুরে ১১ সেপ্টেম্বর এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠিতে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়।
এই প্রবণতা কেন
১. প্রথমত, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক ও নড়বড়ে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যারা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, সেই প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি দুটোর অবস্থাই কাহিল। তাদের নৈতিক-মানবিক-আদর্শিক-রাষ্ট্রনৈতিক অবস্থান ভীষণ দুর্বল। ফলে, এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা চোখে পড়ছে না। মানুষ তাদের সক্রিয় দেখছে না। কবে তারা সক্রিয় ও সবল হবেন, সেই লক্ষণও সুস্পষ্ট নয়। সে কারণেই কোনো উচ্ছৃঙ্খলতা বা অরাজকতা আইনসম্মতভাবে বাধা পাচ্ছে না। বরং এই উচ্ছৃঙ্খলতা বা অরাজকতা ভীষণভাবেই দায়মুক্তির সম্ভাবনাকে বড় করে দেখছে। সেটা মব জাস্টিস বা লিঞ্চিং বা গণশাস্তির জনপ্রবণতাকে উসকে দিচ্ছে।
২. স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা জনদ্রোহকে রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। জনঅভ্যুত্থান দমন করতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে নর্মস ও রীতি ভেঙে, নিরস্ত্র জনগণের ওপর অস্ত্র ও গোলাবারুদ যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করেছে, সেটা গোটা জাতির মনস্তত্ত্বে এক বিরাট বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে।
শেখ হাসিনার পলায়ন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতি, ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ-যুবলীগের পরাজয় সত্ত্বেও সেই বিশৃঙ্খল মনোভাব জনমনস্তত্ত্বে সজাগ রয়েছে। ফলে, সুবিচারের দীর্ঘ ও নিয়মতান্ত্রিক পথে অপেক্ষার বদলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতার সুযোগে ভয়-ডরহীনভাবেই মানুষ নিজেদের হাতেই বিচারকে তুলে নিতে প্ররোচিত হচ্ছে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাঙ্গনে যে মব জাস্টিস সংগঠিত হয়েছে, সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা? যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তারা মূলত ছাত্ররাজনীতিরই প্রোডাক্ট। আমাদের ছাত্ররাজনীতি গত দুই দশকে স্বাভাবিকভাবে বিকশিত হতে পারেনি। ছাত্রলীগ রাজনীতি করেছে সরকারি মদদে, শক্তির ওপর ভর করে। অন্যদের রাজনীতি করতে হয়েছে ছাত্রলীগের শাস্তির কথা মাথায় রেখেই। ফলে একদিকে 'ভয়ের সংস্কৃতি', অন্যদিকে প্রশাসনের সহায়তায় ছাত্রলীগের 'যা ইচ্ছা তাই করার অবাধ স্বাধীনতা'র সংস্কৃতিই আমাদের শিক্ষাঙ্গনের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মনস্তত্ব কোনো সুবিবেচনাকে সুস্থির হতে দেয়নি। শিক্ষাঙ্গনে মব জাস্টিস তারই প্রতিক্রিয়া।
৪. এমনিতেই আমাদের এখানে স্বাভাবিক বিচারকাজ শেষ হতে লম্বা সময় লাগে। এক স্টাডিতে বলা হয়েছে, এখানে একটা স্বাভাবিক বিচারকাজ শেষ হতে মামলাপ্রতি প্রায় ২৯ বছর সময় লাগে। আবার সুদীর্ঘ সময় ধরে বিচারকাজ চললে তাতে সুবিচার কতটা নিশ্চিত হয়, সেটাও একটা প্রশ্ন। এই লম্বা সময় বিচার চালিয়ে যেতে প্রয়োজন হয় একটা বড় আর্থিক সামর্থ্য। অন্যদিকে বিচারকাজে দুর্নীতি, অনিয়মের কথা তো থাকছেই। কাজেই, বিচার হলেই যে সেটা সুবিচার আনবে, ভুক্তভোগীকে সত্যি সত্যিই স্বস্তি দেবে, সেটাও বলা মুশকিল। কাজেই হাতের কাছে কথিত অভিযুক্তকে পেলে নগদে শাস্তি দেওয়ার বাধাহীন সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় উত্তেজক জনতা। মব জাস্টিসের সেটাও একটা বড় কারণ।
৫. মব জাস্টিসে অংশ নেয় দুর্বল জনতার একটা বড় অংশ, যারা সবসময় যেকোনো গোলযোগ বা ঝামেলা এড়িয়ে চলে। যারা কখনই সাহস করে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না। কোনোরকম ঝুঁকি নিতেই যারা সাহস পায় না। যারা সবসময় শুধু নিজেরটা নিয়েই গা বাঁচিয়ে বেঁচে থাকে। এই সুবিধাবাদী, ঝক্কি-ঝামেলা এড়িয়ে চলা দুর্বল জনতাই মব জাস্টিসের বড় অংশ। এরা সুযোগে নিজেদের সর্বোচ্চ নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করতে কার্পণ্য করে না। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, 'দুর্বলের আধিপত্য অতি ভয়ংকর'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ধৃত কথিত চোরকে পেটানো বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এই দুর্বলদের ভয়ংকর নিষ্ঠুরতার প্রকাশ মিলবে। মব জাস্টিসে এই দুর্বলের নিষ্ঠুরতার প্রকাশ ঘটে প্রবলভাবেই।
৬. এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের রাজনীতি ও রাষ্ট্রনৈতিক ইতিহাসে বারংবার নিষ্ঠুরতার ঘটনা ঘটেছে পৌনপুনিকভাবে। যখনই এদেশে কোনো রাজনৈতিক দল দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তার ফলশ্রুতিতে দেশকে দেখতে হয়েছে ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা।
১৯৭১ সালের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে প্রথমবারের মতো ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। তারপর গণতন্ত্র হত্যা করে তৈরি হয় একদলীয় বাকশাল। ১৯৭৫ সালে ঘটে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড।
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি পায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট দুই-তৃতীয়াংশে গরিষ্ঠতা পায়। ২০০৭ সালে আসে ১/১১ এর সেনাসমর্থিত সরকার।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ক্রমশ দেশে তৈরি করে ফ্যাসিবাদের শাসন। ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে তার সমাপ্তি ঘটে।
ইতিহাসের এই পথপরিক্রমা বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর আমাদের অন্ধ করে দেয়। বিবেকরহিত আচরণ করতে বাধ্য করে। আমাদের রাজনৈতিক ডিএনএতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার এই বিপদজনক আচরণের বীজ লুকিয়ে আছে। দেশের রাজনীতির এই অস্থিরতা, অস্বাভাবিকতা, নিয়মহীনতার মধ্য দিয়েই প্রত্যেকে একেকজন দানব হয়ে ওঠার প্রকৃতিগত শক্তি অর্জন করে। ফলে যেকোনো সুযোগেই সেটার প্রকাশ ঘটে। লিঞ্চিং বা মব জাস্টিস তার বড় উদাহরণ।
প্রতিকারের উপায়
এই প্রবণতা তাহলে বন্ধ হবে কী করে? প্রথমত, রোগটা কোথায় সেটা বুঝতে হবে। তারপরই হাত দিতে হবে শুশ্রূষায়। এখন সে কাজটা করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই।
প্রথমত, সরকারকে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি দৃশ্যমান করতে হবে। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নিয়মমাফিক ন্যায্যতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আইনের হাতকে আইনমাফিক চলতে দিতে হবে। মানুষকেও বুঝতে দিতে হবে যে, আইনের কাছেই মানুষ নিরাপদ। এই স্বস্তিবোধ জনমনে ফিরিয়ে দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বর্তমান সরকার কোনো স্বাভাবিক অবস্থার সরকার নয়। এটি জনঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায়ের সরকার। তাই তার কাজের বহর যেমন বিপুল জনপ্রত্যাশার, চাপও পাহাড়সমান। অন্যদিকে পরাভূত-পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদের সমর্থক-সুবিধাভোগীরাও এই সমাজ-রাষ্ট্রেই জনতার আড়ালে লুকিয়ে আছে। তাদের শক্তি-সামর্থ্য-আর্থিক ক্ষমতাও সক্রিয়। যেকোনো অজুহাতে ফ্যাসিবাদের সহায়তাকারী-উপকারভোগীরা বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে জোরদার প্রচেষ্টা চালাবে। মব জাস্টিস নিয়ে যেসব ঘটনা ঘটছে, তার আড়ালে যে এই গোষ্ঠীর উপস্থিতি নেই, তা হলফ করে বলা যাবে না। মব জাস্টিস নিয়ে যে বিস্তর হইচই, সেখানেও তাদের উপস্থিতি অবজ্ঞা করা যাবে না।
ফ্যাসিবাদের দোসরদের ফিরে আসার কোনো সুযোগকেই অবারিত করা যাবে না। সে কারণেই যেখানেই যখন মব জাস্টিস সংঘটিত হবে, সেখানেই সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে সক্রিয়তা ও সতর্কতার সঙ্গে।
তৃতীয়ত, মানুষের জীবনকে সহনীয় করে তুলতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে। পরিবহণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, ব্যাংক-ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানসহ জনগণের জীবনকে স্বাভাবিক-সহনীয় করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু টেলিভিশনের পর্দায়, টকশোতে নয়, সত্যি সত্যিই মানুষকে বুঝতে হবে যে, সরকার তাদের জীবন সহনীয় করতে কাজ করছে। এই অনুভব দৃশ্যমান হলে মানুষ উত্তেজনা পরিহার করে সুবিবেচনাবোধকে কাজে লাগাতে উদ্যমী ও উদ্যোগী হবে।
চতুর্থত, শেখ হাসিনার আমলে যে গণহত্যা চলেছে, যে গুমকাণ্ড ঘটেছে, যে দুর্নীতি হয়েছে, যে আর্থিক অব্যবস্থা চলেছে, যে বিপুল অর্থপাচার ঘটেছে—তার সঠিক ও ন্যায্য বিচার হতে হবে। সরকার যে এই কাজে আন্তরিক, তার প্রমাণ জনগণকে দৃশ্যমান করতে হবে। গত সরকারের অপরাধী মন্ত্রী-নেতারা যেন টাকা বা রাজনৈতিক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সেটাও দৃশ্যমান করতে হবে। এসব কাজে সুবিচার নিশ্চিত হচ্ছে—এটা দৃশ্যমান হলে মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে কখনই আগ্রহী হবে না।
সরকারের উপদেষ্টা বা দায়িত্ববানদের কথার বদলে সত্যিকার কাজকে জনগণের সামনে দৃশ্যমান করতে হবে।
জনট্রমা ও মানসিক প্রশান্তি
গত দেড় দশকের স্বৈরশাসন, আমিত্ব, পরিবারপ্রীতি ও গত তিন মাসের গণহত্যা জনমনে এক গভীর ট্রমা তৈরি করেছে। নিজের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সরকারের নির্দেশে সন্তানদের গুলি করে হত্যার দৃশ্য দেখে দেখে দিন পার করতে হয়েছে জনগণকে। সরকারি নির্দেশে প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া, সামরিক-বেসামরিক-বিচারিক আমলাতন্ত্র, মিডিয়ার নিপীড়ক ভূমিকা মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়েছে। দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণরা গুলির মুখে বুক পেতে লড়াই চালিয়ে গেছে। এসবই জনমনে-জনভাবনায়-জনচিন্তায় এক গভীর ট্রমা তৈরি করেছে, যা উপশম হওয়া দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এই ট্রমাতাড়িত জীবনে 'মব জাস্টিস' প্রবণতা একটা সিম্পটম বা উপসর্গ। সমাজের ভেতরেই এর উপস্থিতি, চাষবাস। মনে রাখতে হবে আমরা এমন এক সমাজে বসবাস করছি, যেখানে গণহত্যাকারী শাসক কেবল আসন ছেড়ে পালিয়েছে। তার দোসর সাবেক সেনাপ্রধান, পুলিশের আইজি, ডিবিপ্রধান, মন্ত্রী, দলীয় নেতা, বিচারপতি, সচিব, সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দাপ্রধান, সাংবাদিক নেতাসহ নানাজন নানারকম হত্যামামলার আসামি। তাদের অনেকেই পলাতক। অনেকেই বন্দি। তারা ক্ষমতাধর। দেশে ও বিদেশে তাদের সহায়তাকারী, সাহায্যকারী ক্ষমতাবানরা সক্রিয়।
তাদের অনেকেরই দেশে-বিদেশে রয়েছে বিপুল অর্থ। তাদের বিচারের ভার নিয়েছে এমন এক সরকার, যার রাজনৈতিক কোনো জনভিত্তি নেই। তার একমাত্র শক্তি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শক্তিজারিত জনঅভিপ্রায়। এই জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে হবে জনসন্তুষ্টির ভিত্তিতেই। যে জনগণ নিজের রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছে—সুবিচার, সুশাসন দিয়েই কেবল তাদের সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব। সেই জনসন্তুষ্টি পেলেই এই সরকার সব রকম বৈরিতা, সব বাধা ডিঙিয়ে জনপ্রত্যাশিত কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবে। তাই সুশাসন-সুবিচার নিশ্চিত হলেই মব জাস্টিসের মতো উচ্ছৃঙ্খলতা বা জনতার হাতে আইন তুলে নেওয়ার প্রবণতা রহিত হতে পারে।
শুভ কিবরিয়া: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
Comments