‘পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই রক্ষা করতে পারিনি’

ধসে পড়া ঘর। ছবি: স্টার

ধসে পড়া ঘরের মাটির নিচ থেকে প্লাস্টিকের একটি মগ তুলছিলেন ফয়েজ আহমদ। বন্যার কারণে তার মাটির তৈরি ঘরটি ধসে পড়েছে।

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের মুহুরি নদীর পাড়ের বাসিন্দা দিনমজুর ফয়েজ এক প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ইউনিয়নের বেরুয়া গ্রামটি প্লাবিত হয়েছিল।

দ্য ডেইলি স্টারকে ফয়েজ আহমদ বলেন, 'পাতিল, থালা, কলসি, আলমিরা, আলনা, খাট, লেপ, তোষক থেকে শুরু করে ঘরের কোনো জিনিস নেই। সব নষ্ট হয়ে গেছে। পরনের কাপড় ছাড়া আমাদের কিছু ছিল না। ত্রাণ দিতে আসা লোকের দেওয়া পুরোনো কাপড় পরে দিন পার করছি।'

রোববার সকালে সরেজমিনে ফয়েজের বাড়ির আঙিনায় গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া গ্রামের বৃদ্ধা ছকিনা খাতুন বলেন, 'লোকজন চাল-ডাল দিচ্ছে। কিন্তু চুলা না থাকায় রান্না করতে পারছি না।'

'ঘরে পানি ঢুকে সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু স্টিলের তৈরির আসবাবপত্র অক্ষত পেয়েছি। জানি না এই জিনিস কেমনে জোড়াব', বলেন তিনি।

ছাগলনাইয়া উপজেলার চম্পকনগর গ্রামের বাসিন্দা একরাম হোসেনের টিনের তৈরি ঘরটি পানিবন্দি থাকা অবস্থায় ধসে পড়েছিল। তিনি এখন একটি স্কুলে পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন।

রোববার গিয়ে দেখা যায়, ধসে পড়া ঘর থেকে ভাঙাচোরা জিনিসপত্র কুড়াচ্ছিলেন একরাম ও তার পিতা আব্বাস আলি।

'আমি ইলেকট্রিকের কাজ করি। দিনে এনে রাতে খাই। ধারদেনা করে ফার্নিচার কিনছিলাম। সব ধ্বংস হয়ে গেল', বলেন একরাম।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালে বিয়ে করেছি। তখন কাঠের তৈরি খাট, আলমিরা কিনেছিলাম। পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেল।

ফেনী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা রোববার দুপুর ২টার দিকে ডেইলি স্টারকে বলেন, বন্যায় ফেনীতে কয়েক শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। আমরা উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ঘরহারাদের তালিকা তৈরি করে পাঠাতে বলেছি। তবে এখন পর্যন্ত আমরা ফাইনাল রিপোর্ট হাতে পাইনি।

Comments