এবার এস আলম মুক্ত হলো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

এবার এস আলম মুক্ত হলো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

ইসলামী ব্যাংকের পর এবার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে এস আলম গ্রুপ। কারণ গতকাল রোববার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকটিতে এস আলম গ্রুপের ব্যাপক আধিপত্য ছিল।

জানা গেছে, ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আগের ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে। এই পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন বেলাল আহমেদ, তিনি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের জামাতা। এছাড়া সাইফুল আলমের বোন বদরুন নেসা আলম ও ভাগ্নে মাহমুদুল আলমসহ আরও পাঁচ আত্মীয় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বোর্ডে ছিলেন।

ব্যাংকটির স্পন্সর-ডিরেকক্টর রেজাউল হককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অন্য পরিচালকরা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাকসুদা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম, রূপালী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোরশেদ আলম খন্দকার এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মো. আনোয়ার হোসেন।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী নতুন বোর্ড গঠন করা হয়।

এর আগে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের একদল কর্মকর্তা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ জানানোর পর এই বোর্ড ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সাইফুল আলম শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ২০১৭ সালে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে আসে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এরপর ব্যাংকটি থেকে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা সরিয়ে নেয় এস আলম ও তার সহযোগীরা।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানান, প্রকৃত অর্থ নেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি, যা গত বছর শেষে ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় ৪১ শতাংশ।

এস আলম ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেওয়ায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চলতি হিসাব ঘাটতিতে রয়েছে।

কিন্তু সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নির্দেশে ব্যাংকটির চলতি হিসাবের ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই বিশেষ তারল্য সহায়তা দিয়েছে।

এরপর গত ৭ আগস্ট পর্যন্ত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চলতি হিসাবের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা।

তবে আগস্টের মাঝামাঝি আহসান এইচ মনসুর গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর তারল্য সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক তদন্তে দেখা গেছে, ২০২৩ সাল শেষে এসআইবিএলের খেলাপি ঋণ ছিল ৯ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। অথচ খেলাপি দেখানো হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

July 6, 2024: 'Bangla Blockade' announced

Beyond Dhaka, protesters hold the streets with equal resolve

22h ago