‘ওরা আমার ছেলেকে ছয়বার গুলি করেছে’

‘ওরা আমার ছেলেকে ছয়বার গুলি করেছে’
রায়হান | ছবি: সংগৃহীত

'আমার ছেলে কোনো অন্যায় করেনি; কেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।'

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার চৌলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেহানা। গত ৫ আগস্ট ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তার ছেলে রায়হান (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।

জুলাই মাসের শুরুতে রায়হান বাড্ডায় তার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন এবং সিদ্ধান্ত নেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরবেন না।

পটুয়াখালীর একটি মাদ্রাসা থেকে আগামী বছর রায়হানের দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।

তার বাবা কামাল আকন দিনমজুরের কাজ করেন এবং মা রেহেনা গৃহিণী। ছোট বোন জান্নাতির বয়স মাত্র পাঁচ বছর।

গত ৫ আগস্ট সকালে বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন গুলি চলায়, সে সময় রায়হানের বুকে ও পায়ে মোট ছয়টি গুলি লাগে। তাকে দ্রুততম সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই রাতেই ময়নাতদন্ত ছাড়া রায়হানের মরদেহ পটুয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরদিন পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

চৌলাবুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রায়হানের পরিবারে এখন কেবলই হতাশা। রেহানা ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।

'আমার ছেলের কী দোষ ছিল? সে বৈষম্যহীন একটি ব্যবস্থা চেয়েছিল। ওরা আমার ছেলেকে ছয়বার গুলি করেছে,' বলেন তিনি।

কামাল তার স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, 'আমার ছেলে মন দিয়ে লেখাপড়া করতো। আমাদের স্বপ্ন ছিল সে ভালো রেজাল্ট করবে, একদিন সরকারি চাকরিতে যোগ দেবে, আমাদের অভাবের সংসারের হাল ধরবে। তার অকাল মৃত্যুতে আমাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Malaysia agrees to recruit 'large number' of Bangladeshi workers

Assurance will be given to ensure their wages, safety, and overall welfare, according to ministry officials

1h ago