জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও গণস্বাক্ষর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল। ছবি: স্টার

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদ ও নয় দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। 

এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নিলয়সহ গ্রেপ্তার সবার মুক্তি দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মহুয়া মঞ্চের সামনে জড়ো হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

গণস্বাক্ষর কর্মসুচি। ছবি: স্টার

এসময় শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষক সমাবেশে উপস্থিত হন। 

সমাবেশ শেষে একই স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিয়নসহ গ্রেপ্তার সব শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা এতে স্বাক্ষর করেন।

আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক আব্দুর রশীদ জিতু বলেন, 'সরকারের অনেক মন্ত্রীসহ অনেকেই শিক্ষার্থীদের বিষয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত যারা শহীদ হয়েছে, নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে, তাদের সম্পর্কে কোনো সহানুভূতির বার্তা না দেখিয়ে তারা আমাদের নিয়ে প্রহসন করছে।'

এ সময় অবিলম্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার সব শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি ছাত্র সমাজের নয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এই সমন্বয়ক।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগি সামিহা বলেন, 'হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন চালিয়ে নিতে আমরা ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান করছিলাম। সেখানে পুলিশ রেইড দিল। প্রত্যেক বাড়িওয়ালার কাছ থেকে লিখিত নিল যে আন্দোলনকারীদের বাড়িতে থাকতে দেবে না। এভাবে আমাদের ক্যাম্পাস আমাদের বাসস্থানে থাকতে না দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।'

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানি বলেন, 'সরকার মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে আছে। সরকার আজ পর্যন্ত এত নির্মমতা, এত হত্যাকাণ্ড, এত নির্যাতন, এত নিপীড়নের পরেও কোনো দায়-দায়িত্ব স্বীকার করেনি। অথচ আমরা স্পষ্টভাবে দেখেছি এই সহিংসতা ছড়ানোর পেছনে একজন মন্ত্রীর কী পরিমাণ দায়-দায়িত্ব আছে।'

'আপনারা যে ভয়ের সংস্কৃতি দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন সেটিতে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। আপনারা সত্য স্বীকার করতে শিখুন, ভুল স্বীকার করতে শিখুন। প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার করুন,' যোগ করেন এই শিক্ষক।

 

Comments