জন্মদিন, সায়ীদ স্যার এবং একটি আনন্দিত অনুভব

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে কি কাজে যেন গিয়েছি। সেখানে সুমনের সঙ্গে দেখা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচিত মুখ, প্রাণবান সংগঠক, আমাদের প্রিয়জন মেসবাহউদ্দিন সুমন। জুলাই মাস, তাই স্বভাবতই জানতে চাইলাম, স্যারের বয়স কত দাঁড়ালো? সুমন হিসাব করতে লাগলেন। কেননা স্যারের জন্মসাল দুরকম। একটা অরিজিনাল অন্যটা সার্টিফিকেটে লেখা।

সায়ীদ স্যার তার নিজের জীবনের স্মৃতিরচনা 'বহে জলবতী ধারা' শুরুই করেছেন এই বাক্যে, 'আমার জন্ম কলকাতায়, ১৯৩৯ সালের পঁচিশে জুলাই, মাঝরাতে। শ্রাবণ মাসের সেদিন ছিল আট তারিখ।'

এখানেই স্যার খোলাসা করেছেন, জন্মসাল ও জন্মস্থান নিয়ে তার অনুভবের কথা। লিখেছেন, 'আমার জন্মদিন বলে যে তারিখ ও জন্মস্থান বলে যে -মহানগরীর নাম উল্লেখ করলাম সেই দুটো ব্যাপারেই সারাজীবন আমাকে মিথ্যাকথা বলে যেতে হয়েছে। আমার জন্মতারিখ দশম শ্রেণি পর্যন্ত সঠিক থাকলেও ভুল হয়ে যায় ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেবার সময়। ফি নিচ্ছিলেন আমাদের ক্লাস টিচার। ফাঁকে ফাঁকে ফর্মফিলাপেও সাহায্য করছিলেন। আমি ফর্ম নিয়ে তার কাছে গেলে তিনি আমার ফর্ম উল্টেপাল্টে বললেন: জন্মসাল ১৯৩৯ লিখেছিস কেন? জন্মদিনের জায়গায় লিখে দে পঁচিশে জুলাই, উনিশ শো চল্লিশ। এইভাবেই আইনত আসল বয়সের চেয়ে একবছর পরে আমি পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করি। ১৯৯২ সালে সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়া পর্যন্ত ওই জন্মতারিখই আমাকে লিখে যেতে হয়েছে।'

২.

স্যারের জন্মদিন আমাদের জন্য একটা গভীরতর ভালোলাগার উৎস। কেননা, স্যার তার কর্মে, ভাবনায়, লেখায়, বলায় প্রতি বছরই নানানরকমের নতুন নতুন বিষয়, আইডিয়া যুক্ত করেন। প্রতি বছরই স্যার নিত্য নতুন কাজে ও ভাবনায় নিজেকে ব্যাপ্ত রাখেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র নিয়ে নিত্য নতুন কাজ তো করেনই, তার নিজের লেখারও এক বৃহৎ পরিসর ইতোমধ্যে তিনি সৃষ্টি করেছেন। সবচাইতে বড় কথা সায়ীদ স্যার তার চিন্তায় আশাবাদ ও যুক্তিবাদকে এখনো সমানভাবে ধরে রেখেছেন।

বছর পাঁচেক আগে টেলিফোনে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র শুরু করেছিলেন, সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায় কি পৌঁছুতে পারলেন স্যার? এচিভমেন্টের জায়গাটা কেমন মনে হচ্ছে? স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে খুবই শান্তভাবে বললেন, 'দেখো, কাঙ্ক্ষিত জায়গাতে তো মানুষ কোনদিন পৌঁছাতে পারে না। পৌঁছায় না। মানুষ একটা কাঙ্ক্ষিতের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু পৃথিবীর বাস্তব যেহেতু অন্যরকম কাজেই স্বপ্নটা যে ঠিক গড়িয়ে গড়িয়ে সেইখানেই পড়বে, ওই যে বিলিয়ার্ড খেলায় বল ঠিকমত মারলে অথবা গল্ফ খেলায় বল যেভাবে গর্তের দিকে যায়, এইখানে তো সেই ব্যবস্থা নাই। প্রথমে আমরা আরম্ভ করেছি ১০ জন নিয়ে, তারপর ১৫ জন নিয়ে। এই করতে করতে এখন সংখ্যা বাড়ছে। সংখ্যা বাড়া মানেই কিন্তু লাভ। কারণ এনরিচমেন্টের একটা স্পর্শ, সেটা অন্যরকম বিষয়। যে একটা বই পড়লো সে তো পড়লই, যে একবছরে ৫/৬ টা বই পড়ল তারও মনের ভেতরে কোথায় যেন একটা একটা চেঞ্জ আসে, উন্নত জীবনের জন্য একটা আকুতি আসে আসে। যে কোনোদিন পড়ল না, কিন্তু একটা সুন্দর বই হাতেও নিয়েছিল তারমধ্যেও যেন কিছু একটা ঘটে বলে আমার মনে আশঙ্কা হয়। যে শুধুমাত্র বইয়ের পাতা-টাতাও দেখছিল, হয়তো দু -একটা লাইনও পড়েছিল, পরে একসময় হয়তো বলত, আমরা তো বইটইও পড়তাম। এটা তার একটা প্রাইডের অংশ হয়। এনরিচমেন্টের প্রাইড। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই এনরিচমেন্টের একটা স্বপ্ন আছে- সে সেই স্বপ্ন সফল করতে পারুক আর না পারুক। এনরিচমেন্টের একটা স্বপ্ন মানুষের মধ্যে ইনবিল্ট আছে। মানুষ সবাই ভালো হতে চায়। ভালো হওয়াটার মধ্যেই কিন্তু একটা এনরিচমেন্ট আছে। তারপর নানা পারিপার্শ্বিক পরিবেশের কারণে হয়তো পারে না। কিন্তু সবার মধ্যেই ভালো হওয়ার একটা শুভ ইচ্ছা, সেটা আছে। এইটা বিবেক। মানুষের মধ্যে ওটা আছেই আছে। তারপর তার ভেতরকার পাপ সেটাকে আংশিক পরাজিত করে ফেলতে পারে, সম্পূর্ণ পরিমাণে পরাজিত করতে পারে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা তাকে পরাজিত করে ফেলতে পারে কিন্তু ভেতরে সে ভালো কিছু দেখলে তার পক্ষ নেয়। এটা মানুষের একটা চিরকালীন স্বভাব।

সব প্রাণী বা পশুর মধ্যে কারও লম্বা দাঁত আছে, কারও লম্বা নখর আছে, কারও শুঁড় আছে, কারও লেজ আছে, লেজের মধ্যে কাঁটা আছে, কেউ রঙ পাল্টে ফেলতে পারে, সবারই একটা না একটা প্রতিরক্ষার অস্ত্র আছে। কিন্তু মানুষের সেরকম কিছুই নাই। একটা বাঘ যখন একটা হরিণকে ধরতে যায়, সেটা অত সোজা কাজ না। কিন্তু বাঘের পক্ষে মানুষকে ধরা কিছুই না। মানুষ হচ্ছে সবচেয়ে ভালনারেবল, সবচাইতে অসহায়।

তাহলে মানুষ সার্ভাইব করলো কি দিয়ে?

তার আছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অস্ত্র। যার নাম সহযোগিতা, ভালোবাসা, পরস্পরকে সাহায্য। এই সহযোগিতার নামই তার ভালোবাসা, তার বিবেক। এই সহযোগিতার নামই তার শ্রেয়ত্ব, শ্রেয়বোধ। এই শ্রেয়ত্ব মানুষ ভেতর থেকে ইন্সটিংক্টটিভলি চায়। কিন্তু নিজেরই নানারকম বিরুদ্ধ শক্তি থাকে তার ভেতরে। যেটাকে শয়তান বলে চিহ্নিত করা হয়। আবার বাইরে থেকেও লোভ, পাপ, প্রলোভন এসবের চাপ আছে। এসব কারণেও মানুষ পারে না কিন্তু বেসিক্যালি মানুষ গুডনেসের পূজারি।'

৩.

স্যারের খুব আক্ষেপ সংগঠনের জন্য প্রাণপাত করে আর তার লেখা হলো না। কিন্তু গত একদশকে স্যার মরিয়া হয়ে উঠেছেন লেখালেখির ব্যাপারে। রচনাবলসিসহ প্রায় পঞ্চাশের ওপর বই প্রকাশিত হয়েছে সায়ীদ স্যারের। এর মধ্যে একবার জানতে চাইলাম, এটা কিভাবে সম্ভব হলো। স্যার বরাবরের মত হাসতে হাসতে বললেন, 'যে মানুষ দৌড়াচ্ছে তার মাথায় নতুন আইডিয়া আসতে চায় না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে দাঁত মাজতে মাজতে অনেক নতুন আইডিয়া চলে আসে। অর্থাৎ একটা নতুন আইডিয়ার জন্মের জন্য অবসর দরকার। এ জন্য যারা কবি, লেখক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী তারা ঠিক কাজের জগতের লোক হন না। আবার যারা কাজের জগতের লোক, যারা দৌড়ান ওই সৃজনশীলতা তাদের মধ্যে কম থাকে। আমি বোধহয় একটু ব্যতিক্রম। আমি দুটোই কিছু কিছু পারলাম।'

এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দের যে, সায়ীদ স্যার অনেক মৌলিক, চিন্তাশীল বিষয়ে লিখেছেন। লিখেই চলেছেন। তার স্মৃতিমূলক লেখাগুলোতে আমাদের সমাজের অনেক ভেতরের ক্ষতের দেখা মিলেছে। তার গদ্যও অসাধারণ লাবণ্যময়।

একসময় স্যার বার্ধক্য নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। এ বিষয়ে বেশ কটি বক্তৃতাও দিয়ে ফেললেন। একসময় সুযোগ পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই যে আপনি বার্ধক্য বিষয় নিয়ে এতো কথা বলছেন, আপনার মনের মধ্যে বিষয়টা যেভাবে আলোড়ন তুলছে এটা আপনার স্বপ্নের, আপনার কাজের জন্য বড় অন্তরায় না?

সায়ীদ স্যার বরাবরের মত বললেন, 'না, বড় রকমের অন্তরায় নয়। আমি আসলে বার্ধক্য প্রতিরোধ করছি বলে বার্ধক্য বার্ধক্য করছি। যে প্রকৃত বৃদ্ধ হয়ে যায় সে তসবিহ নিয়ে নেয়, সে প্রতিরোধ করে না। সে আত্মসমর্পণ করে। আমি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করতে চাই।'

'আমি এক জায়গায় বলেছিলাম হিন্দু ধর্মে আছে, ক্ষত্রিয়রা যুদ্ধের মাঠে মারা গেলে স্বর্গে যায়। আমি যুদ্ধের মাঠে মরতে চাই। যাই হোক, যেমনই হোক, মৃত্যুর হাত থেকে তো আমরা কেউ মুক্ত না। সুতরাং মৃত্যুকে এত গুরুত্ব দিয়ে লাভটা কি। আমার গুরুত্ব হচ্ছে জীবন। এবং যতক্ষণ জীবন আছে, যতক্ষণ যুদ্ধ আছে, ততক্ষণ আমি আছি।'

জীবনজয়ী এই ভাবনাটার দেখা কেমনে মিলবে? প্রশ্ন করে বসলাম, এই যে জীবনকে সুন্দর করে কাটানো, জীবনকে আনন্দিত করা, জীবন থেকে আনন্দ নেওয়া- এটা নেওয়ার জন্য মানুষ যে পরিবেশে, যে ভূখণ্ডে বাস করে, ওই ভূখণ্ড যেভাবে পরিচালিত হয় তার সঙ্গে কি তার জীবনযাপনের, আনন্দ-উপভোগের কোনো সম্পর্ক আছে?

স্যার অসাধারণ একটা উত্তর দিলেন। বললেন, 'খুবই সম্পর্কে আছে। যেমন রবীন্দ্রনাথ যে যুগে জন্মেছিলেন এবং যেভাবে চারপাশে থেকে তিনি আনন্দ সংগ্রহ করেছিলেন, সে সময়কার জীবনব্যবস্থা যেমন ছিল শান্ত, স্থির হয়ে দাঁড়ানো, স্তব্ধ হয়ে দেখা। আজকের এই অস্থির, ঊর্ধ্বশ্বাস গতি, উন্মাদ গতির যুগে মানুষ জীবনকে ও রকম নিবিড়ভাবে উপভোগ করার সেই সময়, সেই মানসিক অবস্থাটা কি মানুষের আছে? যেখানে প্রতি মুহূর্তে মানুষের ওপরে এত অত্যাচার হচ্ছে, এত নৈরাজ্য, এত অবিচার, এত ব্যর্থ ফরিয়াদ, সেখানে মানুষের গভীর গভীর আনন্দ উপভোগের সেই শর্তটাই তো নেই।'

আমিও মরিয়া হয়েই জিজ্ঞেস করলাম, সেটা থাকতেই বা হবে কেন?

স্যার এবার উপমায় গেলেন। বললেন, 'থাকলে পরে বাড়ে। যেমন রাতটা খুব সুন্দর। যদি চাঁদের পূর্ণিমাটা থাকে তাহলে রাতটার উপভোগ আরও বাড়ে।'

আমিও থামিনা। পাল্টা প্রশ্ন করি, এখন যদি পূর্ণিমা না থাকে?

স্যারও ততক্ষণে মজা পেয়ে গেছেন। বললেন, 'পূর্ণিমা যদি না থাকে তাহলে রাতকে উপভোগ করতে প্রতিভা লাগবে। কিন্তু পূর্ণিমা যদি থাকে তাহলে যে কোনো মানুষ আনন্দিত হয়ে উঠবে, ওর জন্য আর বাড়তি কিছু লাগবে না। সুতরাং পরিবেশ তো খুব বড় একটা ব্যাপার।'

৪.

মানুষকে ভালোবাসার ক্ষমতা সায়ীদ স্যারের অসাধারণ। যারা তাকে নিবিড়ভাবে দেখেছেন তারা এটা জানেন। গুণগ্রাহিতার শক্তিও তার মুগ্ধ করার মতো। কারও মধ্যে গুণ দেখলে, বোকার মতো সেটাকেই প্রেম দিয়ে আঁকড়ে ফেলেন। ভালোবাসা দিয়ে, প্রেম দিয়ে, মানুষের হৃদয়কে জয় করতে চান সবসময়। আশা জাগিয়েই যেন বাঁচেন তিনি। অন্যের মধ্যে সেটা সংক্রামিত করার ক্ষমতাও তার অসীম।

এ বিষয়ে নিজের বিশ্লেষণটাও খুব প্রেরণাদায়ী, 'আমার মধ্যে হতাশার ক্ষমতাই নেই। আমি দেখেছি হতাশার শক্তি নেই আমার। মানুষের তো হতাশ হতে গেলে কিছু হতাশার শক্তি লাগে। আমি সবকিছুর মধ্যে খালি আশা দেখতে পাই। আমি এক জায়গায় লিখেছি যে, আমরা যারা জীবনের ট্যারা চোখ আর খোঁড়া ঠ্যাংগুলোকে ভালোভাবে দেখতে পাই না সে সব নির্বোধদেরই বোধহয় লোকে আশাবাদী বলে। 'ট্যারা চোখ আর খোঁড়া ঠ্যাং দেখি না, এখন করবটা কি? ঠ্যাং দেখলে ভালো ঠ্যাংই দেখি এবং ভালো না হলেও মনে হয় যে ঠ্যাংটা ভালো। এটা মনে হয় জন্মগত।'

'রবীন্দ্রনাথের এক কবিতার মধ্যে আছে যে, আমার মতে, এ জগতে ভালোটারই প্রাধান্য। মন্দ যদি তিন চল্লিশ (তেতাল্লিশ) ভালোর সংখ্যা সাতান্ন। উনি জন্মেছিলেনই সাতান্ন নিয়ে। এখন করাটা কি। তোমরা আমাকে যতই বোঝাও আমি সাতান্নই দেখব তেতাল্লিশ দেখব না।'

৫.

'সংখ্যা বাড়া মানেই কিন্তু লাভ'। স্যারের কথা স্যারকে ফিরিয়ে দিয়ে বলতে চাই, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের কর্মবহুল জন্মদিনের সংখ্যা বাড়াও লাভেরই চিহ্ন বহন করে। তাই এই জন্মদিনে আমাদের অনুভব আনন্দের। ভালোলাগার। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আপনি সুস্থ থাকুন, সৃজনশীল থাকুন। শুভ জন্মদিন স্যার।

পুনশ্চ: একবার নিউজ ম্যাগাজিন সাপ্তাহিক-এর পক্ষ থেকে স্যারের ইন্টারভিউ নিতে গেছি। অনেক কথার পরে জানতে চাইলাম, মানুষ যখন কোনো কাজ করে, সেটা পাঁচ বছর করুক, দশ বছর করুক আর পঞ্চাশ বছর করুক মানুষ কি তার ফলাফল দেখতে চায় না। আপনার কখনো কি রেজাল্ট দেখতে ইচ্ছে করে না?

স্যার এবার সিরিয়াস হয়ে গেলেন। ভাবলেন একটু। তারপর দার্শনিকসুলভ নির্মোহতায় বললেন, 'না। আমার রেজাল্ট দেখতে ইচ্ছে করে না। আমার মনে হয় আমার যা করার কথা ছিল আমি সেটুকু করেছি কি না। এইটাই আমার রেজাল্ট। আমি যদি করে থাকি, আমি সন্তুষ্ট।

একটা কবিতা আছে, কে লইবে মোর কার্য, কহে সন্ধ্যারবি, শুনিয়া জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি। মাটির প্রদীপ ছিল; সে কহিল স্বামী, আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি।

আমি তো শেক্সপিয়র নই, আমি তো প্লেটো নই, আমি তো রবীন্দ্রনাথ নই, আমি তো আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। আমি তো একটা ছোট মাটির প্রদীপ। আমি তো তাদের সমান করতে পারব না। কিন্তু আমার যেটুকু করার কথা আমি কি সেটুকু করেছি? এটুকু হলেই আমি আশান্বিত হয়েছি। আর যদি ওটা ফাঁকি দিয়ে থাকি তাহলে আমি তার জন্য দুঃখ করি। কি পেলাম, না পেলাম, তাতে কি আসে যায়! কে কি পায় এই নশ্বর পৃথিবীতে। যেখান থেকে সব মানুষ চলে যাবে। কিসের পাওয়া আর কিসের না পাওয়া। একদিন এ পৃথিবীতে যে বেঁচে ছিলাম সেটা স্মরণ করার ক্ষমতাই যার থাকবে না, এই অনন্তকালের মধ্যে যে কোনো দিন আসে নাই এবং আর কোনোদিন আসবে না তার আবার পাওয়া না পাওয়া কি?'

শুভ কিবরিয়া: সাংবাদিক, লেখক

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

55m ago