‘এই কংক্রিটের শহরে বাতিঘর হলো মরূদ্যান’

আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: সংগৃহীত

আমাদের সমাজের সংকট হচ্ছে, আমরা শুধু একা বড় হতে চাই। কেউ বড় কিছু হতে গেলে, বড় সংগঠন করতে চাইলেও তা হয়ে ওঠে না। এর মধ্যেও বাতিঘর বই নিয়ে বড় হতে চাইছে।'

বাতিঘরের ২০ বছর উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মুক্ত আলাপে তিনি এসব কথা বলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের বাতিঘরে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান।

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশ একটা ভয়ংকর জায়গা। এখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালে তাকে পালিশ করতে অনেক লোক দাঁড়িয়ে যায়। সেখানে লাইব্রেরি করা তো খুবই কঠিন।'

অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'ষাটের দশকে ছাত্রাবস্থায় আমার বড় একটা সময় কাটত নিউমার্কেটে বইয়ের দোকানগুলোতে। সে দোকানগুলো এখন নেই। বইয়ের দোকান চালানো অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জটাই নিয়েছে বাতিঘর।' তিনি বলেন, বাতিঘরের যাঁরা আছেন, তাঁদের বলব, এটা শুধু ব্যবসা দিয়ে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না। এটি সামাজিক উদ্যোগও। সেই হিসেবে বাতিঘরকে বিবেচনা করতে হবে।

লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রকাশনা ও বিক্রি এ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় করে এগোতে হবে বাতিঘরকে। সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদের বক্তব্যে উঠে আসে গত শতকের নব্বইয়ের দশকে আজিজ সুপার মার্কেটে সৃজনশীল বইয়ের দোকান শুরুর ইতিহাস।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, এই কংক্রিটের শহরে বাতিঘর হলো মরূদ্যান। ওয়াটারস্টোনের মতো একটি চেইন বুক শপ হবে এই ঢাকায়, সেখানে বই পড়ার অভ্যাস ফিরে আসবে, বইয়ের জন্য এত টাকা বিনিয়োগ হবে, এটিই তো ছিল অবিশ্বাস্য।

লেখক আলতাফ পারভেজ বাতিঘরের পেশাগত আচরণের দিকটি তুলে ধরেন। এ ছাড়াও লেখক, প্রকাশক অনেকেই জানিয়েছেন বাতিঘর নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশার কথা।

বাতিঘরের কর্ণধার দীপংকর দাস বলেন, অনেক মানুষের স্বপ্ন ও শ্রম নিয়ে তৈরি হয়েছে বাতিঘর।

কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান, আলতাফ পারভেজ, কবি এজাজ ইউসুফী, ইফতেখারুল ইসলাম, মোহিত কামাল, লেখক কিযী তাহনিন, কবি-সাংবাদিক সোহরাব হাসান, লেখক মোজাফফর হোসেন, লেখক অরুণ বিশ্বাস শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও অনুপম প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মিলন কান্তি নাথ, ভাষাচিত্র প্রকাশক খন্দকার সোহেল এই মিলনমেলায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। শুভেচ্ছায় অংশ নিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী রুমিন ফারহানা, কবি সফিকুল ইসলাম,জলদি প্রকাশক নাহিদা আশরাফী, কথাসাহিত্যিক পিওনা আফরোজ প্রমুখ।

মাঝে মাঝে সংগীত পরিবেশন করা হয়েছে। শিল্পীরা শোনান রবীন্দ্রসংগীত থেকে শুরু করে জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের গান। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন জাফর আহমেদ রাশেদ। বাতিঘরের কর্ণধার দীপংকর দাস বলেন, অনেক মানুষের স্বপ্ন ও শ্রম নিয়ে তৈরি হয়েছে বাতিঘর।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff at 20% 'satisfactory', says Khosru

Will comment after knowing full details of the deal

1h ago