ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব বাতিল

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য নেতারা। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০২৩)
ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য নেতারা। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০২৩)

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে উত্থাপিত ফিলিস্তিনকে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বাতিল হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোটের কয়েকটি দল ও ডানপন্থি দলগুলো এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। ইসরায়েলি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য বেনি গ্যান্টজের দল মধ্যপন্থি ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টিও এতে সমর্থন দেয়।

বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ এর আগে দুই রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কথা বললেও তার মধ্য-বামপন্থি দল ইয়েশ আতিদ এই প্রস্তাবে সমর্থন জানায়নি।

মূলত লেবার, রা'আম ও হাদাশ তা'আল দলের আইনপ্রণেতারা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

কয়েকদিন পরই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন এবং হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

তার সফরের আগে নেসেটের এই সিদ্ধান্ত বেশ অর্থবহ।

ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের জন্য এটি বিব্রতকর একটি বিষয়, কারণ যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষত, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সরকার সব সময়ই বলে এসেছে যে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিতে তারা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনকে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়।

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের অধিবেশন কক্ষ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের অধিবেশন কক্ষ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

৬৮-৯ ভোটে বাতিল হয় ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবটি।

এমন কী, ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেও যেন এটি না করা হয়, সেটাও নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়েছে নেসেট।

প্রস্তাব বাতিলের পর আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, 'ইসরায়েলের (পার্লামেন্ট) নেসেট জর্ডানের পশ্চিমে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের তীব্র বিরোধিতা জানাচ্ছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডের প্রাণকেন্দ্রের এতটা কাছে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন ইসরায়েল ও তার নাগরিকদের অস্তিত্ব সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। এতে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত বেগ পাবে এবং সমগ্র অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।'

সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, 'এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে অল্প সময়ের মধ্যে হামাস ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের শাসনভার নেবে এবং একে ইসলামি জঙ্গিবাদ ছড়ানোর কেন্দ্রে রূপান্তর করবে। তারা ইরানের সঙ্গে যোগসাজশে ইসরায়েলকে ধ্বংসের চক্রান্তে জড়িয়ে পড়বে। এ মুহূর্তে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে তা জঙ্গিদের পুরষ্কার দেওয়ার সমতুল্য হবে এবং এর ফলে হামাস ও তাদের সমর্থকরা চলমান সংঘাতে বিজয়ী হওয়ার ধারণা পাবে।'

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হন। জিম্মি হন প্রায় ২৫০ জন।

এই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে সেদিনই গাজায় নজিরবিহীন ও নির্বিচার বিমানহামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরবর্তীতে স্থলবাহিনীও এতে যোগ দেয়। গত ৯ মাসে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা অন্তত ৩৮ হাজার ৭৯৪। আহতের সংখ্যা অন্তত ৮৯ হাজার ১৬৬। হতাহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

Comments

The Daily Star  | English

Interim govt not taking action following white paper: Economists

The makers of the white paper criticised the government for increasing value-added tax

31m ago