কারা ফাঁসকৃত প্রশ্নে পাস করেছে সেটা খুঁজে দেবে কে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

ফাঁসকৃত প্রশ্ন কিনে যারা বিসিএসসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাদের খুঁজে বের করে দেবে কে?—এমন প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার বিকেল ৪টার দিকে চীন সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, '২৪তম বিসিএস পরীক্ষা হয়েছিল ২০০২ বা ২০০৩ সালের দিকে, বিএনপির সময়। বিএনপির আমলে যে পরীক্ষা হতো, চাকরি হতো—এটা কিন্তু কোনো পরীক্ষা-টরীক্ষা না। হাওয়া ভবন থেকে তালিকা পাঠানো হতো, আর সেই তালিকাই (চূড়ান্ত) হতো।'

তৎকালীন বিসিএস পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, 'সেই সময়ে ঢাকা কলেজে পরীক্ষা হয়। একটি বিশেষ কামড়া তাদের জন্য রাখা হয়, যেখানে বসে তারা পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে ঢোকে। তখন কোনো উচ্চবাচ্চ নেই। প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ অনিয়মগুলো তো তখন থেকেই শুরু।'

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসারা পর এসব অনিয়ম বন্ধ করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরকে ওখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের পরে এই কোটা আন্দোলন-টান্দোলন হওয়ার পর এই গ্রুপটা আবার কীভাবে যেন জায়গা করে ফেলে, যেটা এখন ধরা পরেছে।'

তিনি বলেন, 'অনেক সময় এগুলো ধরতে গেলে অনেকে বলে যে এগুলো ধরলে ভালো হবে না, ইমেজ নষ্ট হবে। আমি এসব কথায় বিশ্বাস করি না। কিসের ইমেজ নষ্ট হবে? অন্যায়-অবিচার যে করবে, তাকে আমি ধরবই। তাতে যা হয় হোক—আমি পরোয়া করি না। তাদের ধরতেই হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কারণ, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এগুলো চলতেই থাকবে। এটা যাতে আগামীতে চলতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থাটা নেওয়া হয়েছে।'

প্রশ্নফাঁস আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুরু হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এটা জিয়ার আমলে শুরু হয়েছে, আর খালেদা জিয়া এসে তো আরও একধাপ বেশি করেছে। তখন তো তালিকা আসতো। আর যা তালিকা তাই হতো। অন্য কোনো কিছু করার সুযোগ ছিল না। করলে তারা বেঁচে থাকতে পারবে না। এই তো ছিল বাংলাদেশের অবস্থা। সেটা ভুলে গেলে চলবে?'

২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অবস্থাটা কী ছিল?—প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, 'তারা যে অনিয়মগুলো করে রেখে গিয়েছিল, সেগুলো আবার সুস্থতায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। ২০১৮ সালের পর থেকে আবার এরা কিছুটা হাতে পেয়ে যায়। বহুদিন তাদের পিছনে লেগে থেকে থেকে এখনে ধরতে পেরেছি। যখন ধরা পরেছে, এটার তদন্ত হবে, বিচার হবে।'

প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে যারা সুবিধা পেয়েছেন, অর্থাৎ যারা প্রশ্ন কিনে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন, খুঁজে বের করা গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ব্যবস্থা নেবো না কেন? তাদের তো চাকরি করার কোনো অধিকারই থাকবে না। কিন্তু সেটা খুঁজে দেবে কে? যদি ওরা (প্রশ্নফাঁসকারীরা) বলে যে ওমকের কাছে বিক্রি করেছিলাম, সেটা প্রমাণ করতে পারলে দেখা যাবে।'

'ঘুষ যে দেবে, আর ঘুষ যে নেবে—উভয়েই অপরাধী। যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আর যারা কেনে, তারা দুজনেই অপরাধী। কিন্তু এটা বের করবে কে? সাংবাদিকরা চেষ্টা করে বের করে দিক, ব্যবস্থা নেওয়া যাবে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda acquitted from Zia Orphanage Trust graft case

Following the judgement, there is no legal bar for Khaleda Zia to contest the general elections

1h ago