বন্যাদুর্গত এলাকায় দুর্ভোগে পানিবন্দীরা, তীব্র খাদ্য সংকট

অপর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার কারণে তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে অনেক পরিবার। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদেরপাড়ে উত্তর রমনা গ্রাম। এ গ্রামের ২৪০টি পরিবারের প্রত্যেকেই এখন বাড়িঘর ছেড়েছেন। 

গত ২ জুলাই বাড়িঘর পানিতে ডুবে যাওয়ার পর কেউ গেছেন স্বজনদের বাড়িতে, আবার কেউ উঠেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর। সঙ্গে নিয়েছেন গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র।

বাঁধের ওপর পলিথিন মোড়ানো ঝুঁপড়ি ঘর তৈরি সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বানভাসিরা। অপর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার কারণে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছেন, সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন পরিবারের শিশু ও বয়স্ক মানুষের। কেউ কেউ একবেলা খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন।

সরেজমিনে বাঁধের ওপর আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোর ২৪ শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অনেকের বই-খাতা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে অনেকের বই-খাতা।

কেবল উত্তর রমনা গ্রাম নয়, কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার বন্যাদুর্গত ৩৫০টি গ্রামের বাসিন্দারা এভাবেই দিনযাপন করছেন।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমানা আক্তার (১১) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বই-খাতা বন্যার পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে। রোদে শুকানোর পর কিছু বই-খাতা উদ্ধার হয়েছে। ১০ দিন ধরে স্কুলে যেতে পারছি না। বাবা বসে আছেন। কাজ-কর্ম না থাকায় উপার্জন নেই। আমাদের ভাগ্যে ঠিকমতো খাবারও জুটছে না।' 

রুমানার বাবা রমজান আলী (৪৪) জানান, তিনি কিছু টাকা জমিয়েছিলেন। তবে জমানো টাকা সবই শেষ। সংসার চালাতে তিনি অসহায় হয়ে পড়েছেন। বাঁধের ওপর আর কতদিন থাকতে হবে সেটাও জানেন না। 

বাঁধের ওপর আশ্রয় নেওয়া ফাইদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনো রকমে বেঁচে আছি। কেরোসিন তেল অথবা মোমবাতি কেনার সামর্থ্য নেই। সন্ধ্যা হলেই ঝুঁপড়ি ঘরের ভেতর সবাই শুয়ে পড়ি।'

'এই মুহুর্তে ঠিকমতো খাবার যোগাড়ও করতে পারছি না,' বলেন তিনি।

কুড়িগ্রামে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) নিবেজ উদ্দিন সরকার দ্য ডেইলি স্টরকে বলেন, 'যেসব শিক্ষার্থী বই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে অথবা নষ্ট হয়েছে তাদেরকে নতুনভাবে বই দেওয়া হবে। বন্যার কারণে অনেক স্কুলে পাঠদান বন্ধ। স্কুল খোলার পর এসব শিশুদের তালিকা করা হবে।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শনিবার সকাল ৬টা থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদীর পানি বিপদৎসীমা সমান হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আর ব্রিজ পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি রয়েছে বিপৎসীমার নিচে। ব্রহ্মপুত্রপাড়ের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ধীরগতিতে।

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

8m ago