খাদ্য-পানির সংকটে লক্ষাধিক মানুষ
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2022/06/18/lalmonirhat_lgo-1.jpg)
অনবরত বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে অবনতি হয়েছে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতির। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই জেলার ১৪টি উপজেলার লক্ষাধিক বানভাসি মানুষ।
কিছু বানভাসি মানুষ গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও আসবাবপত্র নিয়ে সরকারি রাস্তা, বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে অধিকাংশই বাড়িতে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন।
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2022/06/18/lalmonirhat_floods_2_lgo.jpg)
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও বিপৎসীমার উপরে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি।
শনিবার সকাল ৬টা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রামের ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন শনিবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, অনবরত বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল থাকায় ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি আরও ২ থেকে ৩ দিন বাড়তে পারে। এ কারণে নদীপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2022/06/18/lalmonirhat_floods-03_lgo.jpg)
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ধরলাপাড় ফলিমারী গ্রামের বানভাসি চম্পা বেগম (২৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গেল ৪ দিন ধরে রান্না করতে পারছি না। ঘরের ভেতর প্রায় কোমর সমান পানি। খাটের উপর কোনো রকমে বসবাস করছি। বাইরে থেকে শুকনো খাবার কিনে এনে খাচ্ছি। মাঝে মাঝে আত্মীয়-স্বজনরা কিছু রান্নাকরা খাবার দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আমরা খুব কষ্টে আছি। রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি না।'
একই গ্রামের বানভাসি জাহেদা বেওয়া (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নলকূপগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না। কলাগাছের ভেলায় চড়ে চলাফেরা করছি। রান্না করতে না পারায় শুকনো খাবার খেয়ে দিনাতিপাত করছি। বন্যার কারণে গ্রামে কোনো কাজ নেই। আয়ও করতে পারছি না। হাতে টাকা না থাকায় বাজার থেকে খাবারও কিনতে পারছি না।'
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর গ্রামের পানিবন্দি কৃষক মোবারক হোসেন (৬২) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রৌমারীতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। একদিকে উজানে ভারতের আসাম থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে আছি। গবাদি পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে আছি।'
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ডিআরআরও) আব্দুল হাই সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানিবন্দি লোকজনের মাঝে শুকনো খাবার চিড়া, মুড়ি, গুড়, পাউরুটি, বিস্কুটসহ দিয়াশলাই, মোমবাতি বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে অনেকেই পানিবন্দিদের খাদ্য ও পানি সহায়তা দিচ্ছেন।'
Comments