এমন ভালো শিল্পী ও ভালো মানুষ কমই পেয়েছি: আবুল হায়াত
'অনেকেই তাকে মা ডাকতেন, কেউ কেউ খালা ডাকতেন—এ রকম ভালোবাসা সব শিল্পী পান না। এটা ছিল তার বড় প্রাপ্তি।'
ঢাকাই সিনেমা থেকে ছোট পর্দায় এসেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ প্রসঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন তার সহশিল্পী আবুল হায়াত।
আজ সোমবার তার না ফেরার দেশে পাড়ি জমানোর দুই বছর।
স্মৃতি হাতড়ে আবুল হায়াত বলেন, 'একসঙ্গে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছি আমরা। শর্মিলী ছিলেন সুশীল শিল্পী। সহজাত অভিনয় করতেন। পরিপূর্ণ শিল্পী বললেও ভুল বলা হবে না। তাকে আমি পরিপূর্ণ শিল্পী বলবো। অভিনয় ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। অভিনয়কে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন।'
তিনি বলেন, 'আজ তার চলে যাওয়ার দিন। সহশিল্পী হিসেবে বলতে পারি, মানুষ তাকে ভুলবে না। দর্শকরা তাকে ভুলবে না। তার অভিনয়ের জন্যই মনে রাখবে। তার চলে যাওয়ার পর একটা শূন্যতা রয়েই গেছে। হয়তো রয়েই যাবে। আবার কবে পূরণ হবে আমরা জানি না।'
দেশের টেলিভিশনে প্রথম ধারাবাহিক দম্পতি নাটকে ছিলেন শর্মিলী আহমেদ। তার অভিনীত আবির্ভাব সিনেমার গান—সাতটি রঙের মাঝে আমি নীল খুঁজে না পাই….এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
এছাড়া দহন, আলিঙ্গন, রুপালি সৈকতে, বসুন্ধরা, বিক্ষোভ, সুয়োরানী-দুয়োরানী, হাঙর নদী, গ্রেনেডসহ অনেক আলোচিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
'শর্মিলী আহমেদ ছিলেন সহজ-সরল মানুষ, সহজ-সরল শিল্পী। আমার পরিচালনায় তিনি অভিনয় করেছেন। পরিচালক যেভাবে চাইতেন, ঠিক সেভাবে তিনি অভিনয় করতেন। এমন ভালো মানুষ ও ভালো শিল্পী কমই পেয়েছি। সে জন্যই জোর দিয়ে বলছি, একজন সহজ-সরল শিল্পী তিনি।
'আমাকে তিনি হায়াত ভাই ডাকতেন। আমি ভাবী ডাকতাম। কেননা, তার স্বামী ছিলেন প্রকৌশলী, আমাদের সিনিয়র ভাই। শর্মিলী আহমেদ, দিলারা জামান, ডলি জহুরসহ আমরা বেশ কয়েকজন অভিনয় করতে করতে একটি পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। বহু বছর আমরা একসঙ্গে অভিনয় করেছি, কখনো মান-অভিমান হয়নি,' যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'এমন একজন শিল্পীর চলে যাওয়া অনেক কষ্টের। আমরাও কেউ থাকব না, এটাই দুনিয়ার নিয়ম। তারপরও তার কর্মের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকবেন। নতুন প্রজন্ম তার অভিনয় দেখে মনে করবে; এটাই প্রত্যাশা। প্রয়াণ দিবসে তার প্রতি শ্রদ্ধা।'
Comments