ত্বক বুঝে সঠিক ফাউন্ডেশন বাছাই করবেন যেভাবে

ফাউন্ডেশন
ছবি: সংগৃহীত

মেকআপ করার অন্যতম এবং অপরিহার্য সামগ্রী হলো ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন ছাড়া মসৃণ, দাগহীন এবং দীর্ঘস্থায়ী মেকআপের কথা ভাবাই যায় না। আর এই ফাউন্ডেশন সঠিকভাবে বেছে নিতে নানা রকমের সমস্যা তৈরি হয়।

না বুঝে ভুল ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ফলে মেকআপ লুক সুন্দর হওয়ার বদলে উল্টো খারাপ হয়ে যায়। তাই দোকানে গিয়ে ফাউন্ডেশন বাছাই করতে হিমশিম খেতে হয় অনেককেই। অনেকে আবার অনলাইনে না বুঝে অর্ডার করে ফেলেন ভুল শেডের ফাউন্ডেশন। তাই বলা যায়, সঠিক ফাউন্ডেশন বেছে নেওয়া একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে যদি নিজের ত্বক সম্পর্কে সম্পূর্ণ সঠিক ধারণা থাকে তাহলে সঠিক ফাউন্ডেশন বাছাই করা সম্ভব।

সঠিক ফাউন্ডেশন বাছাইয়ে যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন তা হলো-

ত্বকের আন্ডারটোন বোঝা

ত্বকের আন্ডারটোন না বুঝলে শুধু ফাউন্ডেশন নয়, পুরো মেকআপের কিছুই ঠিকঠাক মতো করা যাবে না। তাই মেকআপের ক্ষেত্রে প্রথমে নিজের ত্বকের আন্ডারটোন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

সাধারণত ফাউন্ডেশনের শেড ওয়ার্ম, কুল এবং নিউট্রাল এই তিন প্রকার হয়ে থাকে। আন্ডারটোন বুঝতে প্রাকৃতিক আলোতে নিজের হাত ধরে হাতের রগের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করতে হবে তা কী রঙের। রগের রং যদি সবুজ হয়ে থাকে তবে বুঝে নিতে হবে আপনার আন্ডারটোন ওয়ার্ম। যদি রগের রং নীলাভ হয়ে থাকে তবে আন্ডারটোন কুল। আর যদি রগের রং নীল এবং সবুজ দুটোই হয়ে থাকে তবে বুঝতে হবে আপনি নিউট্রাল আন্ডারটোনের।

আন্ডারটোন বুঝে নিলে ফাউন্ডেশন বাছাই করে নিতেও বেশি ঝামেলা পোহাতে হবে না। ওয়ার্ম আন্ডারটোনের হলে ফাউন্ডেশনও ওয়ার্ম নিতে হবে অর্থাৎ যে সব ফাউন্ডেশনের শেড একটু হলুদাভ হয়ে থাকে সেগুলো বেছে নিতে হবে। কুল আন্ডারটোনের হয়ে থাকলে ফাউন্ডেশনও কুল বা নীলাভ ধরনের নিতে হবে। আর নিউট্রাল আন্ডারটোনের যারা আছেন তাদের বেছে নিতে হবে নিউট্রাল শেডের ফাউন্ডেশন।

বুঝতে হবে ত্বকের ধরন

সঠিক ফাউন্ডেশন বেছে নিতে অবশ্যই ত্বকের ধরন বুঝতে হবে। কারণ সব ধরনের ত্বকের জন্য একই ফর্মুলার ফাউন্ডেশন নয়। যেমন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাট ফিনিশ ফাউন্ডেশন বেছে নিতে হবে। এতে করে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অক্সিডাইজ বা ধূসর রং হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। ঠিক তেমনি শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিন ময়েশ্চারাইজারযুক্ত ফাউন্ডেশন। এতে করে শুষ্ক ত্বকে আর্দ্র ভাব থাকবে ফাউন্ডেশনের জন্য এবং মেকআপ দেখতে সুন্দর লাগবে। আর যাদের ত্বকের ধরন স্বাভাবিক, তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো ধরনের ফাউন্ডেশন বেছে নিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ফাউন্ডেশন ফর্মুলা, যাতে ময়েশ্চারাইজার সঠিক পরিমাণে থাকে।

ফর্মুলা অনুযায়ী ফাউন্ডেশন বাছাই

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অবশ্যই লিকুইড ফর্মুলার ফাউন্ডেশন বাছাই করতে হবে। লিকুইড ফাউন্ডেশনে মূলত পানির পরিমাণ বেশি থাকে। তাছাড়া এটি হালকা হয়ে থাকে। তাই তৈলাক্ত ত্বকে দ্রুত মিশে যায়। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিতে হবে ক্রিম ফাউন্ডেশন। ক্রিম ফাউন্ডেশনে ময়েশ্চারাইজারের পরিমাণ বেশি থাকায় তা ভারি ফর্মুলার হয়। এতে স্কিন অয়েলের পরিমাণও বেশি হয়ে থাকে।

তাই এটি শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং মেকআপ নিখুঁত করে। সিলিকন বেজড ফাউন্ডেশনের ফর্মুলা লিকুইড ও ক্রিম ফাউন্ডেশনের মাঝামাঝি হয়ে থাকে। সাধারণত এই ফাউন্ডেশনের কনসিসটেন্সি লিকুইড ফাউন্ডেশনের মতো হয় এবং ব্লেন্ড করার পর এটি ভেলভেটি ফিনিশ দেওয়ার পাশাপাশি ত্বক হাইড্রেটেডও রাখে। তাছাড়া এটি ত্বকে ম্যাটিফাইং ইফেক্টও দিয়ে থাকে। যদি আপনার ত্বকের ধরন স্বাভাবিক হয়ে থাকে, তাহলে এই ফাউন্ডেশন বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়া তৈলাক্ত ত্বকেও ব্যবহার করা যায়।

ফাউন্ডেশন যেখানে সোয়াচ করবেন

ফাউন্ডেশন বাছাই করার জন্য হাতের কবজি নয়, বেছে নিন আপনার জ-লাইন। প্রথমে যে ফাউন্ডেশন কিনতে চান হাতের আঙুলে নিয়ে আপনার জ-লাইনে লাগান। এবার ভালোমতো ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।

দিনের আলোতে বের হয়ে দেখুন আসলেই ফাউন্ডেশনের শেডটি আপনার জন্য সঠিক কি না। কারণ একমাত্র দিনের আলোই আপনার সঠিক শেডটি নির্ধারণ করতে পারে। যদি সম্ভব হয় তাহলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখুন ফাউন্ডেশনের শেডটি অক্সিডাইজ বা ত্বকের রংকে আরও গাঢ় করছে কি না। যদি সব কিছু আপনার মনমতো হয়, তাহলে আর অপেক্ষা করবেন না। কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের ফাউন্ডেশন!

 

Comments