চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

কারভাহাল, ভিনিসিয়ুসের গোলে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ

Real Madrid

প্রথমার্ধে রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণ কাঁপিয়ে দিয়েছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। প্রতিপক্ষের আক্রমণের তোড় ঠাণ্ডা মাথায় সামলে নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ালো রিয়াল। দাপুটে ফুটবলে ম্যাচের লাগাম নিয়ে নিল নিজেদের কাছে। ক্লাব ফুটবলে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা টনি ক্রুসই করে দিলেন প্রথম গোলের সুযোগ। তার কর্নার থেকে গোল করলেন দানি কারভাহাল, পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ওয়েম্বলিতে রিয়ালের উৎসবের রাত এনে দিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।

শনিবার রাতে লন্ডনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে স্প্যানিশ জায়ান্টদের এটি রেকর্ড ১৫তম শিরোপা।

ম্যাচের আগে পরিষ্কার ফেভারিট ছিলো কার্লো আনচেলেত্তির দল। তবে দারুণ রোমাঞ্চকর ফুটবল খেলে ফাইনালে আসা ডর্টমুন্ড লড়তে থাকে সমান তালে। প্রথমার্ধে সুযোগ তারাই বেশি তৈরি করে। সেসব সুযোগ ভেস্তে যাওয়ার পর ঋদ্ধ অভিজ্ঞতা আর কৌশল দিয়ে অনায়াসে ম্যাচ বের করে নেয় সফলতম ক্লাব।

খেলার ১৪ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় ডর্টমুন্ড। নিকো স্লটারব্যাকের কাছ থেকে ক্রস পেয়ে নিকোলাস ফুলক্রুর্গ ঘুরে বল আসে জুলিয়ান ব্র্যান্টের সামনে, তিনি মারেন বাইরে।

পরের কয়েক মিনিটে প্রবল স্নায়ুচাপের মুহূর্ত তৈরি হয় রিয়ালের জন্য। ২১ মিনিটে ম্যাট হামেলসের কাছ থেকে বল পেয়ে ছুটে যান করিম আদেয়েমি। কর্তোয়াকে কাটিয়েও জালে ঢুকাতে পারেননি, গোলমুখে তাকে শট নিতে দেননি কারভাহাল।

তিন মিনিট পর সুর্বন সুযোগ হাতছাড়া করে জার্মানির ক্লাব। এবার ইয়ান মাতেসেনের কাছ থেকে বল পেয়ে ফাঁকা বার পেয়েও পোস্টে মারেন ফুলক্রুর্গ। নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে বেঁচে যায় রিয়াল। দুই মিনিট পর আরেকটি বিপদের হাত থেকে দলকে বাঁচান কর্তোয়া।

ডর্টমুন্ডের তুমুল আক্রমণের স্রোতে ৩০ মিনিটে গিয়ে প্রথম কর্নার পায় রিয়াল। যদিও তাতে সুযোগ তৈরি হয়নি, উল্টো প্রতি আক্রমণে গিয়ে চাঙ্গা ভাব দেখায় ডর্টমুন্ড। পরের কয়েক মিনিট স্তিমিত থাকলেও ৪১ মিনিটে আবার সুযোগ পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। এবার মার্সেল সাবিতজারের মারা শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচান কর্তোয়া।

বিরতির পরই শুরু হয় পাল্টা স্রোত। এবার সুযোগ পেতে থাকে রিয়াল। ৪৭ মিনিটে আক্রমণে যাওয়া ভিনিসিয়ুসকে ফেলে দেন হামেলস। বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে দারুণ শট নেন ক্রুস। ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষক তা আটকে দেন।

৫৭ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে কারভাহালের শট কোনরকমে ঠেকান ডর্টমুন্ডের সুইস কিপার গ্রেগর কোবিয়াল।  ৬৯  মিনিট পর বক্সে উড়ে আসা ক্রসে বেলিংহাম মাথা স্পর্শ করতে পারলে তখনই এগিয়ে যেত রিয়াল।

৭৪ মিনিটে আসে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। ক্রুসের নেওয়া কর্নার কিক থেকে হেডে রিয়ালকে এগিয়ে দেন কারভাহাল। শেষ ম্যাচে মহা গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট করা ক্রুস হন উৎসবের মধ্যমণি।

তিন মিনিট পর কামাভিঙ্গার মাইনাস থেকে বল পাওয়া বেলিংহাম আরেকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে তখন দুই গোলে এগিয়ে যেত স্প্যানিশ জায়ান্টরা। পরের মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি কিক থেকে মারা ক্রুসের শট ডানদিকে লাফিয়ে বাঁচান কোবিয়াল। এই কিপার খানিক পর কামাভিঙ্গার শটও ক্ষিপ্রতা দিয়ে ফিরিয়ে দেন। কর্নার থেকে বল পেয়ে নাচোর মারা হেডও আটকান তিনি।

একের এক আক্রমণে বন্যায় দিশেহারা ডর্টমুন্ড ভুল করে বসে খানিক পর। ৮৩ মিনিটে আর আটকানো যায়নি ভিনিসিয়ুসকে। রক্ষণের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে সহজেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এই গোলে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের জয়। ভিনিসিয়ুসের গোলের পর ক্রুসের চওড়া হাসি বুঝিয়ে দেয় কতটা তৃপ্তি নিয়ে সমাপ্তি টানতে পারার আনন্দে ভরে উঠছে তার মন। 

দুই গোলের লিড পাওয়ার পর ক্রুসকে তুলে নেন আনচেলেত্তি। শেষবারের মতন কিংবদন্তি জার্মান ফুটবলারকে বিপুল করতালিতে অভিবাদন জানান রিয়াল সমর্থকরা। শেষ কয়েক মিনিট অল্প বিস্তর চেষ্টা চালিয়ে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়ে ডর্টমুন্ড। আর অন্য দিকে চলতে থাকে শুভ্র উৎসব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাকে অভ্যাসে বানিয়ে ফেলা রিয়াল ভাসতে থাকে তুমুল আনন্দে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus calls for working together amid global challenges

Highlights importance of building an economy where fruits of technology, growth are shared evenly by all people

50m ago