দুদকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের অভিযোগ

শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বহুবিধ অবৈধ সুবিধা প্রদান করেছেন ড. ইউনূস।

আজ রোববার গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, 'পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে ইউনূস নিজেই দর নির্ধারণী কমিটি গঠন পূর্বক নিজের প্রণীত ও স্বাক্ষরিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্রয় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়াই উচ্চদরে গ্রামীণ ব্যাংকের কোটি কোটি টাকার প্রিন্টিং সামগ্রী ছাপানোর কার্যাদেশ প্রদান করে নিজে ও পরিবারিকভাবে বিপুল অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।'

এতে আরও বলা হয়েছে, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ লঙ্ঘন করে এবং পরিচালনা পর্ষদের কাছে গোপন রেখে নিজেই নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনের সঙ্গে ব্যাংকের স্বার্থপরিপন্থি একটি তত্ত্বাবধায়ক (ম্যানেজিং এজেন্ট) চুক্তি করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই ড. ইউনূস ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রেষণে নিয়োগ দেন এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের অফিস বিনা ভাড়ায় ব্যবহার করেন।

গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ সুবিধা শুধুমাত্র ভূমিহীন দরিদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনি আইন ভঙ্গ করে তার পারিবারিক রুগ্ন ও লোকসানি প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বিপুল অংকের ঋণ প্রদান করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

অভিযোগে বলা হয়, পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ড. ইউনূস ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতিসাধন করে নিজ প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অনাদায়ী টাকা সুকৌশলে মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন।

দুদকে অভিযোগ জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের গ্রামীণ ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, 'ড. ইউনূস তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই ব্যাংকে কাজ করছেন। তবে তিনি এমনভাবে প্রভাব বলয় তৈরি করেছিলেন যে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারতো না।'

ব্যাংকটির আইন উপদেষ্টা মাসুদ আখতার বলেন, 'অনেক আগে থেকেই গ্রামীণ ব্যাংকে দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছিলো৷ ড. ইউনূস এমডি থাকা অবস্থায় এসব বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি৷ তিনি সবসময় বলেন যে তিনি বা তার পরিবারের কেউ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সুবিধা নেননি৷ কিন্তু নিজের ও পরিবারের সদস্যদের প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনে সাড়ে নয় কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন।'

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago