বরগুনা

১৮ বছর ধরে ভবন নেই, পরিত্যক্ত খাদ্যগুদামে পুলিশ ফাঁড়ি

বরগুনার আমতলী উপজেলার গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ি। ২০০৬ সালে সরকারি পরিত্যক্ত একটি খাদ্যগুদামে এ পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম শুরু হয়। ছবি: স্টার

বরগুনার আমতলী উপজেলার গাজীপুর বাজারে পুলিশ ফাঁড়ির নিজস্ব ভবন নেই দেড় যুগ ধরে। স্থানীয় একটি পরিত্যক্ত খাদ্য গুদামে অফিস, থাকা-খাওয়াসহ বসবাস করতে হচ্ছে এখানে কর্মকত ১৮ জন পুলিশ সদস্যকে। বাতাস চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় জানালা না থাকায় তীব্র তাপদাহে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের।

স্থানীয়রা জানান, আমতলী উপজেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বদিকে গাজীপুর বাজার। এখানে কয়েকশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় হাজার খানেক নানা ধরনের স্থাপনা রয়েছে। এই বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। সরকারি পরিত্যক্ত একটি খাদ্যগুদামে এ পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম শুরু হয়।

ফাঁড়িতে দুই জন পুলিশ পরিদর্শক, তিন জন সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ও ১৩ জন কনেস্টবলসহ মোট ১৮ জন পুলিশ সদস্যের পদায়ন করে কার্যক্রম শুরু করা হয়।

এ খাদ্যগুদামটির দুই পাশে ১০ ফুটের দুটি দরজা ছাড়া চারপাশে কোনো জানালা নেই। এই ভবনেই অফিস, থাকা খাওয়াসহ সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

খাদ্যগুদামটির দুই পাশে ১০ ফুটের দুটি দরজা ছাড়া চারপাশে কোনো জানালা নেই। গরমে তীব্র কষ্ট পোহাতে হয় পুলিশ সদস্যদের। ছবি: স্টার

সম্প্রতি পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটির দুই পাশে বিশাল আকারের দুটি দরজা থাকলেও তা মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্ধ করার উপায় না থাকায় সেটি সবসময় খোলা থাকে। নেই কোনো জানালা। ভবনটির এক কোণে অফিস স্থাপন করা হয়েছে। ঘরের ভেতরে খোলা চত্ত্বরে দুই সারিতে কাপড় টাঙিয়ে কয়েক সারি কাঠের চৌকি রাখা হয়েছে।  অফিসের জন্য জ্বালানো আলোর মধ্যেই সারা রাত ঘুমাতে হয় তাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, এ পুলিশ ফাঁড়িতে পরিত্যক্ত ভবন ছাড়া কিছুই নেই। এখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।

আরেক পুলিশ সদস্য বলেন, বর্তমানে তাপদাহের কারণে ছাদ গরম থাকায় রাতেও ঘুমানো যায় না। আমরা স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই।

এই ভবনেই অফিস, থাকা খাওয়াসহ সব ফাঁড়ির সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ছবি: স্টার

গাজীপুর ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক দিবাকর চন্দ্র বলেন, ভবন না থাকায় পুলিশ সদস্যদের একটি খাদ্যগুদামের ভবনে থাকা খাওয়া ঘুমানোসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে হয়। এতে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য এখানে একটি নতুন ভবন প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হোসেন রেজা  বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Chief adviser calls for urgent reforms in social services to prioritise senior citizens, girls

Political interference led to unfair distribution of benefits in the past, he says

1h ago