‘সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পরিচালনায় প্রশাসকের আইনি বাধা নেই’

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদ স্থগিত এবং কোম্পানি পরিচালনার জন্য প্রশাসক নিয়োগে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে দুই মাসের মধ্যে এ বিষয়ে শুনানি ও রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছে আপিল বিভাগ।

আইডিআরএর আইনজীবী ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসকে মোরশেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আইডিআরএর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন।'

তিনি বলেন, 'এই আদেশের পর সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পরিচালনায় আইডিআরএ কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রশাসকের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ায় কোনো আইনি বাধা থাকছে না।'

গত ২৩ এপ্রিল বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদকে স্থগিত করে প্রশাসক নিয়োগে আইডিআরএর সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন এবং আইডিআরএর এই সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তার কারণ দর্শাতে বলেন।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান এবং পরিচালককে (আইন) চার সপ্তাহের মধ্যে এই কারণ দর্শাতে বলা হয়।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী মনিরুজ্জামানের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ ও রুল দেন।

গত ২১ এপ্রিল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফেরদৌসকে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় আইডিআরএ। তার এই নিয়োগের পর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ স্থগিত করা হয়।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে দুর্নীতি ও অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইডিআরএ।

কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের ছয় সদস্য পরিচালক হিসেবে থেকে বিমা প্রতিষ্ঠানটির অন্তত ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে উঠে এসেছে একটি অডিট রিপোর্টে।

সরকারি এক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) অডিটটি পরিচালনা করে।

২০২৩ সালে গোলাম কুদ্দুসকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগসহ ১৭টি অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের জন্য আইডিআরএ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অডিট ফার্ম হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগ দেয়।

অডিটে দেখা গেছে, গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের ছয় সদস্য পরিচালক হিসেবে নিজেদের জন্য শেয়ার ইস্যু, গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন কোম্পানিকে অবৈধ অর্থ প্রদান এবং তার পরিবারের সদস্য পরিচালকদের বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন উপায়ে তহবিল আত্মসাৎ করেছেন।

অবৈধভাবে বিলাসবহুল গাড়ি কেনা এবং গোলাম কুদ্দুসের পরিবারের সদস্য পরিচালকদের অতিরিক্ত লাভ দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশ ভ্রমণ ও চিকিৎসার বিলের মাধ্যমে তারা বিপুল অর্থ পকেটে ভরেছে।

তারা গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স পলিসি থেকে অবৈধ কমিশনের মাধ্যমেও মোটা অঙ্কের টাকা আয় করেছে, বলা হয়েছে ওই অডিট রিপোর্টে।

আইডিআরএর তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনালী লাইফের সারা দেশে ২৬ হাজার ৬৯৩ জন বিমা এজেন্টসহ ২০৪টি শাখা রয়েছে।

কোম্পানিটি ২০২০ সালে মোট বিমা দাবির ৯৯ দশমিক নয় শতাংশ, ২০২১ সালে ৯৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৯৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ১২২ কোটি ২৬ লাখ টাকার প্রায় সব বিমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Will protect investments of new entrepreneurs: Yunus

Yunus held a meeting with young entrepreneurs at the state guest house Jamuna where15 male and female entrepreneurs participated

1h ago