সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে প্রশাসক নিয়োগ

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

গত ১৮ এপ্রিল এই সিদ্ধান্ত নেয় আইডিআরএ। বিমা কোম্পানিটিতে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফেরদৌসকে।

আইডিআরের মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রশাসক আজ যোগদান করেছেন।'

আজ রোববার নিয়োগকৃত প্রশাসকের কাছে আইডিআরএর পরিচালক (উপসচিব) আহম্মদ এহসান উল হান্নানের সই করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি শর্তে তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বীমা আইন ২০১০ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের কাছে শিগগির একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন, পাশাপাশি দ্রুত একটি যোগ্য দেশি বা বিদেশি অডিট ফার্মের মাধ্যমে কোম্পানির পূর্ণাঙ্গ অডিট সম্পন্ন করে বিমা পলিসি ইস্যুসহ বিমা ব্যবসা ও অন্যান্য সব কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

শর্তের মধ্যে আরও রয়েছে, কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্ভূত যেকোনো বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার জন্য আবেদন করতে হবে এবং প্রয়োজনে তিনি এক বা একাধিক পরামর্শক নিয়োগ করতে পারবেন।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে দুর্নীতি ও অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইডিআরএ।

কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের ছয় সদস্য পরিচালক হিসেবে থেকে বিমা প্রতিষ্ঠানটির অন্তত ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে উঠে এসেছে একটি অডিট রিপোর্টে।

সরকারি এক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) অডিটটি পরিচালনা করে।

২০২৩ সালে গোলাম কুদ্দুসকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগসহ ১৭টি অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের জন্য আইডিআরএ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অডিট ফার্ম হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগ দেয়।

অডিটে দেখা গেছে, গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের ছয় সদস্য পরিচালক হিসেবে নিজেদের জন্য শেয়ার ইস্যু, গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন কোম্পানিকে অবৈধ অর্থ প্রদান এবং তার পরিবারের সদস্য পরিচালকদের বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন উপায়ে তহবিল আত্মসাৎ করেছেন।

অবৈধভাবে বিলাসবহুল গাড়ি কেনা এবং গোলাম কুদ্দুসের পরিবারের সদস্য পরিচালকদের অতিরিক্ত লাভ দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশ ভ্রমণ ও চিকিৎসার বিলের মাধ্যমে তারা বিপুল অর্থ পকেটে ভরেছে।

তারা গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স পলিসি থেকে অবৈধ কমিশনের মাধ্যমেও মোটা অঙ্কের টাকা আয় করেছে, বলা হয়েছে ওই অডিট রিপোর্টে।

আইডিআরএর তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনালী লাইফের সারা দেশে ২৬ হাজার ৬৯৩ জন বিমা এজেন্টসহ ২০৪টি শাখা রয়েছে।

কোম্পানিটি ২০২০ সালে মোট বিমা দাবির ৯৯ দশমিক নয় শতাংশ, ২০২১ সালে ৯৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৯৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ১২২ কোটি ২৬ লাখ টাকার প্রায় সব বিমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangla Academy suspends list of awardees

A statement from Bangla Academy's Director General Mohammad Azam said following a meeting of the Literary Award committee, the decision was made to reconsider the original list

1h ago