সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

‘বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণেরই নামান্তর’

নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে সই করেন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম।

এতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞাকে স্বাধীন সাংবাদিকতা, গণতন্ত্র এবং মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী বলে মনে করে সংগঠন দুটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অলিখিত নিষেধাজ্ঞার কারণে সাংবাদিকদের অস্থায়ী পাস ইস্যু বন্ধ রাখা হয়েছে। অর্থনীতিবিষয়ক প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলা উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

তিনি বলেছেন, 'এখন থেকে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে শুধু সেই কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যাবে। তবে আগের মতো সাংবাদিকরা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।' কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুখপাত্রের বক্তব্যে উল্লেখিত এ পদক্ষেপ সাংবাদিক প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞারই বহিঃপ্রকাশ বলে জানিয়েছে নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ।

নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ মনে করে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণেরই নামান্তর। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ব্যাংক ও আর্থিক খাত তথা দেশের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা জানার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হবে। প্রকারান্তরে এটি এ খাত নিয়ে জনমনের অনাস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। একই সঙ্গে তা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যেকোনো দেশের অর্থনীতি ও গণমানুষের আস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ব্যাংক খাত বিনির্মাণ এবং এ খাতের ওপর জনগণের আস্থাকে সুদৃঢ় করতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বছর সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে জনসাধারণের তথ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ভূমিকা রেখে এসেছেন।

এ অবস্থায় সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশ দ্রুততার সঙ্গে নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

5h ago