নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে তেলবীজ বিক্রি করছেন পটুয়াখালী-বরগুনার কৃষক

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার গছানী গ্রামে হচ্ছে সূর্যমুখী চাষ। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

খুচরা বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেলবীজ উৎপাদনে ঝুঁকেছেন পটুয়াখালী ও বরগুনার কৃষক।

গত তিন বছরে পটুয়াখালীতে তেলবীজের উৎপাদন ৩৮ শতাংশ ও বরগুনায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে পটুয়াখালীতে ১০ হাজার ৬৭৯ হেক্টর জমিতে তেলবীজের চাষ হয়েছে। গত বছর সাত হাজার ৮১২ হেক্টর ও ২০২২ সালে ছয় হাজার ৮৯১ হেক্টরে তেলবীজের চাষ হয়েছিল।

বরগুনায় এবার পাঁচ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমিতে তেলবীজ উৎপাদন হয়েছে। গত বছর পাঁচ হাজার ৩৫ হেক্টর ও ২০২২ সালে দুই হাজার ৩৫ হেক্টরে চাষ হয়েছিল।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার গছানী গ্রামের কৃষক কাজী আনিচুর রহমান চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এতে তার ব্যয় হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা।

'উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে বীজ পেয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি, কমপক্ষে ৩০ মণ সূর্যমুখীর ফল পাব,' বলেন আনিচুর।

প্রতি মণ ফল তিন হাজার বা তার বেশি টাকায় বিক্রি করতে পারলে তার প্রায় এক লাখ টাকা আয় হবে।

আনিচুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাজারের ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে আমি ২০২২ সাল থেকে সূর্যমুখী ও সরিষা চাষ করছি। এতে আমার পুরো বছরের তেলের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। উদ্ধৃত্ত বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছি।'

তিনি জানান, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচজন।

দশমিনার উপসহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রবি সাইফুল বলেন, 'বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকই এখন সূর্যমুখী ও অন্যান্য তেল বীজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।'

তিনি বলেন, 'গত বছর দশমিনায় মাত্র ৪২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হলেও এ বছর ৯০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। তেল বীজের মধ্যে সূর্যমুখী বেশি লাভজনক, কারণ এতে তুলনামূলক বেশি—প্রতি কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। যেখানে সরিষার বীজে পাওয়া যায় ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম।'

বরগুনার তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের কৃষক ইউসুফ হাওলাদার বলেন, 'গত বছর আমি ছয় বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছিলাম। আমার আট সদস্যের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এক লাখ টাকা বিক্রি করেছি।'

বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক বদরুল আলম জানান, 'তেলবীজের উৎপাদন বাড়াতে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ছাড়াও সার-বীজসহ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। ফলে কৃষকরাও বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

19m ago