গাজা যুদ্ধের ২০১তম দিনে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ সিনেটকে ১৩ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার অনুমোদন দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশটির শত্রুদের ‘কড়া বার্তা’ দেওয়া হয়েছে।
ইউএস ক্যাপিটল নামে পরিচিত মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন। ছবি: এএফপি
ইউএস ক্যাপিটল নামে পরিচিত মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন। ছবি: এএফপি

মার্কিন পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদে ইসরায়েল, ইউক্রেন ও তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিল পাস হওয়ার পর উচ্চ কক্ষ সিনেটেও তা সহজেই পাস হয়েছে। ইতোমধ্যে গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক, নির্বিচার হামলার প্রায় সাত মাস হতে চলেছে। 

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

এমন সময় এসব অনুমোদন এল যখন গাজার যুদ্ধের ২০১তম দিন পার হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এই হামলায় প্রায় এক হাজার ১৭০ জন নিহত হন। হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫০ জন মানুষ।

এই হামলার প্রতিক্রিয়া প্রায় সাত মাস ধরে গাজায় নির্বিচার স্থল ও বিমানহামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত এই হামলায় ৩৪ হাজার ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ সিনেটকে ১৩ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার অনুমোদন দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশটির শত্রুদের 'কড়া বার্তা' দেওয়া হয়েছে।

'আজ রাতে দ্বিপাক্ষিক সংখ্যাগরিষ্ঠ ঐক্যমতের ভিত্তিতে ইসরায়েলি সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দেওয়ার জন্য আমি মার্কিন সিনেটকে ধন্যবাদ জানাই', যোগ করেন তিনি।

মার্কিন কংগ্রেস চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার কিছুক্ষণ পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে ক্যাটজ এ কথা জানান।

তিনি আরও বলেন, 'ইসরায়েল সহায়তা প্যাকেজ এখন কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অনুমোদন পেয়েছে এবং এটি আমাদের জোটের শক্তিমত্তার স্পষ্ট প্রকাশ; যা আমাদের সকল শত্রুর প্রতি কড়া বার্তা পাঠাচ্ছে।'

তিনি সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার ও রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেলকে 'ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রতি নিরবচ্ছিন্ন অঙ্গীকার দেখানোর জন্য' ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন, 'ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে কেউ কখনো ভাঙতে পারবে না।'

কয়েক মাস বিলম্বের পর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে (প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে) গতকাল মঙ্গলবার সহজেই পাস হয় বৈদেশিক সহায়তা বিল। এই বিলে ইসরায়েলের পাশাপাশি ইউক্রেন ও তাইওয়ানের জন্যেও সামরিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট এদিন ইউক্রেন, ইসরায়েল, তাইওয়ান ও ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন অংশীদারদের ৯৫ বিলিয়ন (৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের চারটি বিলে অনুমোদন দেয়। বিলগুলো অনুমোদিত হয় ৭৯-১৮ ভোটে। সহায়তার বড় অংশ সামরিক হলেও কিছু পরিমাণ মানবিক সহায়তাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

এর আগে গত শনিবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান নেতারা তাদের আগের অবস্থান বদলে ভোটাভুটিতে এই বিলগুলো পাস করেন।    

সিনেটে বিল চারটি একটি প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করে উপস্থাপন করা হয়। প্রথম বিলে ইউক্রেনে জরুরিভিত্তিতে তহবিল জোগানের লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের ৬১ বিলিয়ন (৬ হাজার ১০০ কোট) ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় বিলে ইসরায়েল ও সংঘাতকবলিত অঞ্চলের বেসামরিক মানুষদের মানবিক সহায়তা হিসেবে ২৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৬০০ কোটি) ডলারের কথা বলা হয়।  

আটলান্টায় নির্বাচনী প্রচারণায় জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
আটলান্টায় নির্বাচনী প্রচারণায় জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

তৃতীয় বিলে ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে 'চীনের প্রভাব মোকাবিলায়' ৮ দশমিক ১২ বিলিয়ন (৮১২ কোটি) ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা মূলত তাইওয়ানের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত।

চতুর্থ বিলটি গত সপ্তাহে ওই প্যাকেজে যুক্ত করে প্রতিনিধি পরিষদ। এ বিলে চীনের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক নিষিদ্ধ করা, ইউক্রেনে জব্দ করা রুশ সম্পদ স্থানান্তরের উদ্যোগ ও ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এসব বিল কার্যকর হওয়ার জন্য সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। এখন বাইডেনের সইয়ের জন্য বিলগুলো তাঁর কাছে পাঠানো হবে। তাঁর সইয়ের পর বিল আইনে পরিণত হবে। তখন ইসরায়েল ও ইউক্রেনকে সামরিক এবং মানবিক সহায়তা দিতে বাইডেন প্রশাসনের সামনে আর কোনো বাধা থাকবে না।

Comments

The Daily Star  | English
Impact of esports on Bangladeshi society

From fringe hobby to national pride

For years, gaming in Bangladesh was seen as a waste of time -- often dismissed as a frivolous activity or a distraction from more “serious” pursuits. Traditional societal norms placed little value on gaming, perceiving it as an endeavour devoid of any real-world benefits.

18h ago